বিএনপির আন্দোলনের ডাকে মানুষ হাসে: ওবায়দুল কাদের

বার বার আন্দোলনের ডাক দিয়ে ব্যর্থ বিএনপি এখন ‘হাসির খোরাকে’ পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার ঢাকায় নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “জনগণ এখন তাদের গণ-আন্দোলনের ডাক শুনলে হাসে। কারণ ১৩ বছরে বিএনপি বহুবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, কিন্তু জনগণ তো দূরের কথা, তাদের নেতাকর্মীরাই সাড়া দেয়নি।”

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, “দেশে এই মুহূর্তে গণ-আন্দোলনের বস্তগত কোনো উপাদান নাই, অতীতের মত এবারও জনগণ আপনাদের ডাকে সাড়া দেবে না।"

সরকার ‘একদলীয় শাসন ব্যবস্থা’ কায়েম করতে চায়- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি এক দিকে ভোটে আসবে না, আবার নির্বাচিত হয়েও মির্জা ফখরুল ইসলাম সংসদে যাবেন না।

“সংসদেতো বিএনপির প্রতিনিধিও রয়েছে। তাহলে একদলীয় শাসন হয় কীভাবে? বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রের মুখোশের আড়ালে যা করেছিল, জাতি তা ভুলে যায়নি।”

বাংলাদেশকে ‘নতজানু রাষ্ট্র বানানোর পরিকল্পনা’ চলছে, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “দেশের মানুষ জানে, কারা বাংলাদেশকে নতজানু রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। কথায় কথায় যারা দেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে, যারা বিদেশি দূতাবাসের বন্ধ দরজায় ফুল আর মিষ্টি নিয়ে অপেক্ষা করে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করে, তারাই বাংলাদেশকে নতজানু রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়।

“বিএনপিই তাদের কর্মকাণ্ডের দ্বারা বিদেশিদের কাছে দেশের ইমেজ নষ্ট করছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ দেশের ইমেজ বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।" 

বিএনপিই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দেশ ও জাতির স্বার্থ ‘বিসর্জন দেয়’ এবং বাংলাদেশকে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করার ‘অপচেষ্টা করে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে শেখ হাসিনা সবসময় আপসহীন, যদি তিনি জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব সমর্থন করতেন, তাহলে ২০০১ সালেই ক্ষমতায় আসতে পারতেন।”

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, “অনিয়ম করে যারা প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছে, বা পাঠাবে, তাদের বিরুদ্ধে খোঁজ- খবর নেওয়া হচ্ছে, প্রমাণ পাওয়া মাত্র শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন বিদ্রোহী প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ থেকে  মনোনয়ন দেওয়া হবে না এবং এবারও যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন তাদের ভবিষ্যতে কোনো পদ-পদবি ও মনোনয়ন দেওয়া হবে না।”

আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী নেতৃত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বলেও জানান কাদের।

তিনি বলেন, “তৃণমূল পর্যন্ত নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়নের বিষয়ে সবাইকে মনোযোগ দিতে হবে। দলীয় নেতৃবৃন্দকে এ ব্যাপারে আরো মনোযোগ দিতে হবে “

আরিপিও অনুযায়ী সব পর্যায়ের নেতৃত্বে নারীদের ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব থাকার কথা থাকলেও তা পূরণ করতে পারেনি দেশের কোনো রাজনৈতিক দল।

ওই লক্ষ্য পূরণ করতে আওয়ামী লীগের সবাইকে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।