‘রাজনৈতিকভাবে অকার্যকর’ বলে বিএনপির জোট ছাড়ল খেলাফতে মজলিশ

বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ‘রাজনৈতিকভাবে অকার্যকর’ হয়ে পড়েছে, এমন কারণ দেখিয়ে জোট ছাড়ল খেলাফত মজলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2021, 12:13 PM
Updated : 1 Oct 2021, 02:26 PM

শুক্রবার বিকালে দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম মজলিশে শুরার বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন জোট ছাড়তে সংগঠনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন।

এর আগে চলতি বছর ১৪ জুলাই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে ‘যথাযথ মূল্যায়ন না পাওয়ার’ কারণ দেখিয়ে জোট থেকে বেরিয়ে যায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একটি অংশ।

জমিয়তে উলামার ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে জোট ছাড়ার কথা জানান।

এছাড়া ২০১৯ সালের ৬ মে আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) সংসদে যোগ দেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়।

এরও আগে ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপির যোগ দেওয়া নিয়ে মতবিরোধে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায় লেবার পার্টির একাংশ।

শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জোট ছাড়ার কারণ তুলে ধরেন খেলাফতে মজলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

তিনি বলেন, “খেলাফত মজলিশ বিএনপি জোটে দীর্ঘ ২২ বছর যাবত আছে। ২০১৯ সাল থেকে জোটের দৃশ্যমান কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা ও কর্মসূচি নাই। ২০১৮ সালে জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে ২০ দলীয় জোটকে কার্যত অকার্যকরও করা হয়।

“এমতাবস্থায় আদর্শিক, সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আজকে মজলিশে শুরার অধিবেশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, খেলাফত মজলিশ একটি আদর্শিক সংগঠন হিসেবে স্বকীয়-স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে ময়দানে ভূমিকা রাখবে এবং এখন থেকে ২০ দলীয় জোটসহ সকল রাজনৈকিত জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জানান, তারা অন্য কোনো জোটেও যুক্ত হবে না।

পুরানা পল্টনে একটি রেস্তোরাঁয় এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

এর আগে মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাকের সভাপতিত্বে মজলিশে শুরার বৈঠক হয়। দুই শতাধিক সদস্যের এই বৈঠকে জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদেরের অবিলম্বে মুক্তির দাবিও জানানো হয়।

এসময় সংগঠনের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, মাওলানা মুওদদীন আহমেদ, মাওলানা আহমেদ আলী, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন, অধ্যাপক আবদুল হালিম, যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান কাউসার, আবদুল জালিল, মুনতাসীর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, শিক্ষা বিষয়ক মিনহাজুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।   

২০১২ সালে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের লক্ষ্যে চারদলীয় জোটের পরিসর বাড়িয়ে ১৮ দলীয় জোট গঠন করে বিএনপি। পরে আরও দুইটি দল তাতে যোগ দিলে ২০ দলীয় জোট হয়।

গত কয়েক বছরে বিজেপিসহ কয়েকটি দলের একাংশ যেমন, ইসলামী ঐক্যজোট, এনপিপি, ন্যাপ, লেবার পার্টি, এনডিপি মত ভিন্নতার কারণে দেখিয়ে এই জোট ছেড়ে গেছে।

সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একটি অংশ জোট থেকে বেরিয়ে যায়।

জোটের বর্তমান শরিকরা হচ্ছে- বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ভাসানী, বাংলাদেশ ন্যাপ, ইসলামিক পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি (একাংশ), মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (একাংশ), সাম্যবাদী দল, ডেমোক্রেটিক লীগ-ডিএল, জাতীয় দল, পিপলস লীগ ও লেবার পার্টি।