বুধবার বিকালে নির্বাচন ভবনে নিজের দপ্তরে আগের মতোই লিখিত একটি বক্তব্য সাংবাদিকদের পড়ে শোনান কথাসাহিত্যিক মাহবুব তালুকদার, যার শিরোনাম ছিল ‘পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন সম্পর্কে- আমার কথা’।
তিনি বলেন, “বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনে বহুদলের অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের কারণ বিশ্লেষণ করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য।
“ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতাও আমার কাছে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত মনে হয়। এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা জড়িত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। রাজনৈতিক সমঝোতা ব্যতীত এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়।”
সোমবার ১৬০ ইউপি ও ৯ পৌরসভার ভোট হয়।
নূরুল হুদা বিদেশে থাকায় এই সময়ে ৬ দিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব তালুকদার।
ভোটের সহিংসতায় কয়েকজনের মৃত্যু এবং বিরোধীদের অনেক অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় মাহবুব তালুকদার বলেন, “এহেন সংক্ষিপ্ত সময়ে আকস্মিকভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন সাধন সম্ভব নয়। তারপরও কিছু কথা থেকে যায়।…নির্বাচনে তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে।
“বিশৃঙ্খলা, অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারা, প্রতিপক্ষকে হুমকি প্রদান ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
সহিংসতা রোধ কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি দাবি করে মাহবুব তালুকদার বলেন, “নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে একজন সংসদ সদস্যকে সতর্কও করা হয়েছে।”
এবারের ইউপিতে ৬৯.৩৪ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে ৪৩ জন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, “নির্বাচন না করেই চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত হওয়া এই নির্বাচনকে ম্লান করে দিয়েছে। অন্যদিকে ৯টা পৌরসভায় তিনজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন।
“নির্বাচন যেহেতু অনেকের মধ্যে বাছাই, সেহেতু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়াকে নির্বাচিত হওয়া বলা যায় কি?”
“১৫ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নীরবতা আমাকে হতাশ করেছে। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমরা কি গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় সামিল হতে অনিহা প্রকাশ করছি?” বলেন তিনি।