ছাত্র রাজনীতিকে ‘জ্ঞান ও মূল্যবোধের মডেল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার আহ্বান কাদেরের

ছাত্র রাজনীতিকে ‘জ্ঞান’ এবং ‘মূল্যবোধের’ মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শিক্ষা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “পরীক্ষার্থী নয়, চাই শিক্ষার্থী, জীবিকা নয়, জীবনের জন্যই শিক্ষা প্রয়োজন। এ বাস্তবতা শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও নীতিনির্ধারকদের সবার আগে উপলব্ধি করতে হবে।

“আগামী দিনের রাজনীতি হতে হবে জ্ঞাননির্ভর, সেজন্য ছাত্র রাজনীতিকে জ্ঞান এবং মূল্যবোধের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।”

শিক্ষা দিবস নিয়ে ছাত্র সংগঠনের কোনো কর্মসূচি না থাকায় দুঃখ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আজকের দিবসটা ছাত্র সমাজের জন্য অপরিহার্য, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন নিয়ে আজ কয়জনে জানে? তা জানা নেই।

“ছাত্রনেতারা এখন তাদের ক্যাম্পাস, শিক্ষা, শিক্ষার সমস্যা এমনকি কোনো সংগঠন এই দিবসের তাৎপর্য নিয়ে কোনো সেমিনারও করে না। এ ধারা চলতে থাকলে ছাত্র সংগঠনগুলোর জৌলুস হারিয়ে যাবে।”

শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য জরুরি গবেষণা নির্ভর নতুন কলাকৌশল উদ্ভাবনের তাগিদ দিয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষকতার মান বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

করোনাভাইরাস মহামারীতে যেসব ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে আবারও শিক্ষাঙ্গনমুখী করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবেন না, তিনি ভাবেন আগামী প্রজন্ম নিয়ে, আর এটাই হওয়া উচিত। পরবর্তী প্রজন্মের কথা মাথায় আছে বলেই তিনি আজ রাষ্ট্রনায়ক।”

হলে অছাত্রদের থাকা বন্ধ করতে হবে

ছাত্র নয়- এমন কেউ যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে কোনোভাবে থাকতে না পারে সে বিষয়ে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “এ মাসের শেষেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে, হলগুলোতে জীবনযাত্রা কেমন তা দেখতে হবে। হলগুলোতে অছাত্ররা অবস্থান করে, তাদের লিখিতভাবে হলে থাকা বন্ধ করতে হবে।

“এ নিয়ে কে খুশি হল, কে অখুশি হল তাতে কিছু যায় আসে না। শিক্ষাকে গুণগত গভীরতায় আনতে হলে এসব সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।”

প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনা আর প্রযুক্তি মনস্কতায় গড়ে তুলতে হবে নতুন প্রজন্মকে।

“দেশের উদ্যমী তরুণদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে সমৃদ্ধ আগামীর জন্য, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার জন্য, শেখ হাসিনার সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশের জন্য এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য।”

আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন উপকমিটির আয়োজনে ‘শিক্ষা: ২০৪১ সালের লক্ষমাত্রা অর্জনের বাস্তবিক কৌশল’ শীর্ষক এই সেমিনারে সভাপতি ছিলেন উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল খালেক।

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর মুনাজ আহমেদ নুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল সেমিনারে বক্তব্য দেন।

মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান এবং আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দলের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব শামসুন্নাহার চাঁপা।