পরিবেশ রক্ষার নামে ‘মতলববাজি’ করছেন অনেকে: নৌ প্রতিমন্ত্রী

রাজনীতিতে পরাজিত হয়ে ‘অনেকে’ নদীর পরিবেশ রক্ষার নামে ‘মতলববাজি’ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2021, 11:35 AM
Updated : 15 Sept 2021, 01:13 PM

বুধবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তার এ মন্তব্য আসে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অনেককে আমি দেখেছি, রাজনীতিতে পরাজিত হয়ে নদীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। কয়, পরিবেশ বাঁচাও। রাজনীতির পরিবেশ ধ্বংস করে এখন নদীর পরিবেশ রক্ষা করতে চায়, এদেরকেও চিহ্নিত করতে হবে।

“রাজনীতির ময়দানে পরাজিত হয়ে এখন এসব ছোটখাট এই ধরনের সামাজিক সংগঠন গড়ে তুলে আরেক ধরনের মতলববাজি কাজকর্ম করছেন কিনা, সেগুলোও কিন্তু আমাদের নজরে আনতে হবে।”

খালিদ মাহমুদ বলেন, “আমরা যখন নদীর অবৈধ দখল উদ্ধার করলাম, তখন এই ধরনের মতলববাজ সংগঠনের একজন বলল, আগে বেসরকারি দখলে ছিল এখন সরকারের দখলে চলে যাচ্ছে। মানে দখলদার ঠিকই আছে।”

এখনও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান যে নদীর পাড় দখল করে রয়েছে- সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “নদী রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ছিল, রাষ্ট্র সেই দায়িত্ব সেভাবে পালন করেনি বলে একটা বিরাট বোঝা হয়ে পড়েছে।

“আমরা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে ধারাবাহিকভাবে এই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। এই কাজগুলো করতে গিয়ে আমরা কোনো আপস করিনি। প্রকাশ্যে কেউ এখন আর এভাবে (নদী দখলে) সাহস পাচ্ছে না।”

শুধু নদীর জায়গায় অবৈধ দখল নয়, যে কোনো ‘অবৈধ কর্মকাণ্ডের’ বিরুদ্ধে এই সরকার ব্যবস্থা নিতে ‘দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’ জানিয়ে তিনি বলেন, এসবের প্রতিফলন কিছু কিছু পাওয়া গেছে।

“দেশে তো বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যাবে না। আমরা যে আলোচনা করছি এটা একদিনে হয়নি। এই দেশে তো একটা লুটেরা অর্থনীতি আছে। দেশবিরোধী লোকজন তো আছে।”

পদ্মাসেতুর নিরাপত্তার জন্য ‘যে কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত’ মন্তব্য করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “কষ্ট, বঞ্চনাকে সহ্য করে এই পদ্মা সেতু করার যে সাহস দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, সেজন্য আজ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান।”

পদ্মা সেতুতে দফায় দফায় ফেরির ধাক্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেকেই বলে এতদিন ধাক্কা লাগল না এখন ধাক্কা লাগছে কেন? এতদিন কিন্তু এখানে পদ্মা সেতু ছিল না বা কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না কর্তৃপক্ষের যে, একটি নির্দিষ্ট পকেট দিয়ে ফেরি নিয়ে যেতে হবে। এতদিন দায়িত্ব ছিল বিআইডব্লিউটিএর। এখন দায়িত্ব পদ্মা সেতু নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের।”

তিনি জানান, গত বছর ৩৮, ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলার দিয়ে ফেরি চলাচল করেছে। এখন সেখানে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে। গতবছর সেতুতে স্প্যান বসানো ছিল না। উন্মুক্ত ছিল। এখন সুনির্দিষ্ট পকেট দিয়ে চলতে হয়।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের মাস্টারদের সে অভিজ্ঞতা নেই। আমাদের প্রথম যে ধাক্কা লেগেছে, আমাদের যে নির্দেশনা ছিল, মাস্টাররা সেটা অনুসরণ করে নাই বলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

“কিন্তু সর্বশেষে যে ঘটনাটা ঘটে গেল। সেটা সেতু কর্তৃপক্ষ বলেছে ধাক্কা লাগে নাই। মাস্তুল না সিগনাল লাইট যখন নামিয়ে দেওয়া হয় তখন ভিডিওটা ধারণ করা হয়েছে।”

রিপোর্টারের আরও সতর্ক হওয়া দরকার ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দ্রুত নিউজটা ছেড়ে দিয়ে সমগ্র দেশবাসীকে একটা আতঙ্কের মধ্যে রাখা ঠিক হয়নি। আরও একটু বিশ্লেষণ করলে বুঝতে পারত ধাক্কা লাগেনি, আসলে সিগন্যাল নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

আরও পড়ুন-