ইসি গঠনে আইন চায় জাপা

নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশে আইন না থাকাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে ‘সমালোচনার’ সৃষ্টি হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2021, 09:13 AM
Updated : 14 Sept 2021, 09:13 AM

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংসদের বিরোধী দীলয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, “স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশে একটি আইন নেই, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সংবিধানে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইন প্রণয়ন করতে হবে।

“আমরা চাই, সংবিধানের আলোকে আইনের মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। যারা দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে। এতে নির্বাচন কমিশন গঠনে স্থায়ী সমাধান হবে।”

সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে। এ বিষয়ে প্রণীত আইনের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন।

স্বাধীনতার পর ৫০ বছরেও কোনো সরকার এ সংক্রান্ত আইন করেনি। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন আইনের একটি খসড়া তৈরি করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনটি হয়নি।

২০১২ ও ২০১৭ সালে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপতির গঠন করা সার্চ কমিটি সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য বেশ কিছু নাম প্রস্তাব করেন। বর্তমান কমিশন গঠনের আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সেখানে দলগুলো পাঁচটি করে নাম প্রস্তাব করেছিল।

ওই নামগুলো বিবেচনায় নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি মোট ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেছিল। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পাঁচ সদস্যের বর্তমান কমিশন গঠন করেন।

কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের মেয়াদ আছে আর কয়েক মাস। আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব নিতে হবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান তার বিবৃতিতে বলেন, “প্রতি পাঁচ বছর পর রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেন। এতে নানাবিধ সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আবার দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কমিশনার নিয়োগ হলে মানুষের ভোটাধিকার লংঘিত হয়।

“তাই সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল ও এ বিষয়ে সিভিল সোসাইটির বিশেষজ্ঞদের সাথে অলোচনা সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য একটি আইন প্রণয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। আবার সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করার বাধ্যবাধকতা আছে।”

জিএম কাদের বলেন, “আমরা আশা করি, আইনের মাধ্যমে সৎ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে, যারা নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখর করতে পারবে। এতে করে নির্বাচন কমিশন দেশের মানুষকে নির্বাচনের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে সক্ষম হবে। প্রতিনিধি নির্বাচনে দেশের মানুষ নিজেদের ভূমিকা আরো জোরালো করতে পারবে। তখনই গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ পেতে শুরু করবে দেশের মানুষ।”