আওয়ামী লীগকে হটাতে যুগপৎ আন্দোলনেও ‘রাজি’ বিএনপি

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক জোটে আনতে না পারলেও যুগপৎভাবে কর্মসূচিতে আনা যায় কি না, তার হদিস খুঁজছে এখন বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2021, 12:21 PM
Updated : 7 Sept 2021, 12:21 PM

দেড় দশক ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নীতি-নির্ধারকদের একজন খন্দকার মোশাররফ হোসেন মঙ্গলবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। আমরা কি পারি না এই সরকাকে হাটানো ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হতে?

“যদি ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ আপাতত করা সম্ভব না হয়, যুগপৎ আন্দোলন করতে পারি। এটাই এখন সময়ের দাবি।”

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে বিএনপি চারদলীয় জোটের পরিসর বাড়িয়ে ২০ দলীয় জোট করেছিল। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে আরেকটি জোট করেছিল ২০ দলের বাইরে থাকা কয়েকটি দল নিয়ে।

তাতেও সফল না হওয়ার পর এখন এর বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে কাছাকাছি আনতে চাইছে বিএনপি। অর্থাৎ এগুলোর সঙ্গে আদর্শিক পার্থক্য থাকলেও আলাদাভাবে হলেও একই কর্মসূচি পালন করা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, “এটা শুধু বিএনপির দাবি নয় যে, এই সরকারকে হটাতে হবে। এই ইস্যুতে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ইস্যুতে আমার মনে হয় কোনো দলের দ্বিমত নেই।

“এখানে আমাদের ২০ দলের নেতা আছেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সাহেব, এখানে আমাদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা আছেন মাহমুদুর রহমান মান্না সাহেব, আবার আজকের প্রজন্মের ভিপি আছেন নুরুল হক নূর। আমি তাদের বলতে চাই, আমাদের টার্গেট কী? গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকবে। অতএব শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারকে হটাতে হবে।”

বিএফইউজের চার যুগ পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ইতিহাস বিকৃতি, ঘৃণার চাষ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনায় কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বক্তব্য রাখেন।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন খন্দকার মোশাররফ।

তিনি বলেন, “যদি প্রকৃত গণতন্ত্র থাকত, তাহলে এই ধরনের অব্যাহতভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করতে কোনো সরকার, কোনো দল, কোনো ব্যক্তি পারত না।”

জিয়াউর রহমানের রণাঙ্গনে যুদ্ধ করা, চন্দ্রিমা উদ্যানে তার লাশ নিয়ে ক্ষমতাসীনদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন তিনি।

“তারা সত্যকে আড়াল করে জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই ইতিহাস বিকৃতি ও মিথ্যাচার করছে।”

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকনের পরিচালানায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি সেলিম ভুঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা সাদেক আহমেদ খান, সাংবাদিক এ্মএ আজিজ, রাশেদুল ইসলাম, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ইলিয়াস হোসেন, বাসির জামাল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান ও ঢাকা রিপোর্টিার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানী বক্তব্য রাখেন।