জীবিকা সচলে এ বছরই ১০ কোটি মানুষকে টিকাদান: কাদের

জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি জীবিকা সচল করতে এই বছরই ১০ কোটি মানুষকে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার লক্ষ্য সরকার ঠিক করেছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2021, 12:35 PM
Updated : 4 August 2021, 12:35 PM

তিনি বলেছেন, “আমাদের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে টিকা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। এই বছরের মধ্যে ১০ কোটি লোককে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানি প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন।”

বুধবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভায় একথা বলেন তিনি।

আট দিনে ১ কোটি মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দিতে আগামী ৭ অগাস্ট থেকে যে গণটিকাদান কর্মসূচি সরকার নিয়েছে, তা সফল করতে দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, দেশের ১৪ হাজার টিকা কেন্দ্রে এক কোটি মানুষকে টিকা প্রদান করা হবে। গণটিকাদান কর্মসূচি যাতে সফলভাবে সমাপ্ত হয়, এজন্য দলীয় এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সারাদেশে প্রচার চালাতে হবে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সব মানুষকে যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, তা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সকলকেই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই অবস্থায় সকলের প্রতি আহ্বান, সরকারের বিধি-নিষেধ মেনে চলুন।”

শোকাবহ অগাস্টে মাসব্যাপী নেওয়া সীমিত কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের জন্য দলের সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা থাকার ‘নতুন তথ্য’ বিভিন্ন মাধ্যমে উঠে আসছে।

“১৯৭৬ সালের ২ অগাস্ট যুক্তরাজ্যের আইটিভিতে প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে একটি সাক্ষাৎকারে মেজর ফারুক বঙ্গবন্ধু হত্যকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। কর্নেল ফারুকের স্বাক্ষরে সানডে টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধেও জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার কথা উঠে আসে। এছাড়া মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুজের একটি বইয়ে বঙ্গবব্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরা হয়।”

পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্টের পর দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার ‘কলঙ্কের বোঝা’ বহন করতে বাধ্য হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন।”

বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতে কূটনৈতিক প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। পঁচাত্তরের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি এই জাতিকে আবারো নেতৃত্বশূন্য করতে তারেক রহমানের প্রদত্ত মদদে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টায় নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

“অগাস্ট মাস এলেই বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়। ইতিহাসের অবাঞ্ছিত সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বিএনপির অন্তর্জ্বালা বেড়ে যায়। এজন্য তারা ইতিহাসকে অস্বীকার করতে চায়, শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চায়।”

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, শিক্ষা সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপা, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।