বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “টিকা না নেওয়া ১৮ বছরের বেশি বয়সীরা বের হলেই নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, গতকাল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মাথায় স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়-এর সাথে দ্বিমত পোষণ করে বিবৃতি দিয়েছে। অপরিকল্পিত ও অদূরদর্শী এবং সমন্বয়হীনতার কারণে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। মন্ত্রীদের বক্তব্যে বিভ্রান্ত হচ্ছেন দেশবাসী। একই সঙ্গে সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে সাধারণ মানুষ।“
কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও পরবর্তী করণীয় নিয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউনের সময়সীমা আরও পাঁচ দিন বাড়িয়ে ১০ অগাস্ট পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
এর মধ্যে আগামী এক সপ্তাহ ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনার পর ১১ অগাস্ট থেকে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিস খোলার পরিকল্পনার কথা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, “১১ অগাস্ট থেকে ১৮ বছরের ওপরের কোনো মানুষ ভ্যাকসিন ছাড়া মুভমেন্ট করলে সেটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। রাস্তাঘাটে, গাড়িঘোড়ায়, মোটরসাইকেল, সাইকেল, টেম্পু, বাস, ট্রেনে হোক চলাচল করলে টিকা নেওয়া থাকতে হবে। আমরা সেই সুযোগ করে দিচ্ছি। আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”
বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, ওই হুঁশিয়ারি তাদের বক্তব্য নয়। সে রকম কোনো প্রস্তাবও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেয়নি। এর কয়েক ঘণ্টা পর আগের দিনের ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন মন্ত্রী মোজাম্মেল হক।
বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের তার বিবৃতিতে বলেন, “১১ অগাস্ট থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স, অথচ টিকা নেয়নি এমন কেউ বাইরে বের হলেই নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা- সরকারের এমন সিদ্ধান্ত শুধু অযৌক্তিক, অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য নয়, এটি পুরোপুরি হাস্যকর।“
“বর্তমান বাস্তবতায় দেশে দুই ডোজ টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা এক কোটির নিচে। কোভিড টাক্সফোর্সের রিপোর্ট অনুযায়ী টিকা কর্মসূচিতে বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে টিকা কর্মসূচিতে সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। সারা বিশ্ব যখন টিকা দিয়ে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করছে, মনে হচ্ছে তখন টিকা দিতে ব্যর্থতার দায় এড়াতে উল্টাপাল্টা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।“
জিএম কাদের বলেন, “এখন টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স সীমা ২৫ বছর নির্ধারিত। সেক্ষেত্রে কীভাবে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী গার্মেন্ট শ্রমিক কারখানায় যাবে? এই বয়সের গণপরিবহনের শ্রমিক কীভাবে কাজে বের হবে? অথবা এই বয়সী দোকানি কীভাবে দোকান খুলবে?”