বাংলাদেশ এখন ‘দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ’: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ সরকার বাংলাদেশকে ‘দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ’ করে ফেলেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2021, 02:08 PM
Updated : 30 July 2021, 06:32 PM

শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এই অভিযোগ করেন।

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকে ব্যাংকিং সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে এই সরকার, আজকে শেয়ার মার্কেটকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানিলন্ডারিং এমন পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, এখন সরকার নিজে বলছে যে, এটা নিয়ন্ত্রণ করার দরকার, দুদক চেষ্টা করছে।

“দুর্ভাগ্য আমাদের এই কয়েকদিন আগে দেখলাম দুদকের যিনি প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন তার নামেও দুর্নীতির অভিযোগ চলে এসছে।”

গোটা দেশ এখন দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগের সরকার আজকে সেটা তৈরি করেছে। সেই ১৯৭৫ সালে যে উদ্দেশ্য ছিল যে, বাংলাদেশকে একটা নতজানু দেশ হিসেবে পরিণত করবে, পরনির্ভরশীল অর্থনীতি হিসেবে তৈরি করবে- সেই উদ্দেশ্যে তারা (সরকার) কাজ করে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আজ সরকার কী করেছে? একটা মিথ তৈরি করতে চায়। মিথটা কি যে, সাউথ ইস্ট এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটা রোল মডেল- মধ্য আয়ের দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ।

“ইটস এ টোটালি একটা ভোক্স, একটা মিথ ছাড়া কিছু না। তারা গোয়েবেলসীয় পদ্ধতিতে প্রচার-প্রচারনার মধ্যে দিয়ে আজকে সেই কথাটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।”

এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তিনি ‘হারিয়ে যাওয়া’ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবাইকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আজকে আমাদেরকে জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করে প্রথমে আমাদের দলকে সুসংগঠিত করতে হবে, জনগণকে সঙ্গে নিতে হবে এবং সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে একীভূত করে সেই গণতন্ত্রকে ছিনিয়ে আনতে হবে যে গণতন্ত্র আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে।

“দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ আছেন তাকে মুক্ত করতে হবে, এদেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করতে হবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের চিন্তাভাবনা থেকে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একজন ব্যক্তি একটা পরিবার এবং একটা দলকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য আজকে যেভাবে সমগ্র দেশকে গ্রাস করে ফেলা হচ্ছে। তখনও (১৯৭২-৭৫ সাল) ঠিক সেইভাবে গ্রাস করে ফেলা হয়েছিল।

“মানুষজন চোখের সামনে দেখল যে, তারা সুপরিকল্পিতভাবে লুটপাটের মধ্য দিয়ে এদেশটাকে একটা ভাগাড়ে পরিণত করেছিল- এই কথাগুলো বললে খুব বাড়িয়ে বলা হবে না। অত্যন্ত বড় নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সেই সময়ে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নামটা পরিবর্তন করে তাকে নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি নাম দেয়া উচিত। কারণ তারা এই দেশের মানুষের আশা-আকাংখাকে ধুলিসাৎ করে দিয়েছিল।”

বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী জাতীয় উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে ‘ব্যক্তিখাত বিকাশে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মুক্তবাজার অর্থনীতি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

জাতীয় উদযাপন কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান।