‘মূল্যায়ন হয় না’ বলে ২০ দল ছাড়ল জমিয়তের একাংশ

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলে ‘যথাযথ মূল্যায়ন না পাওয়ার’ কারণ দেখিয়ে জোটটি থেকে বেরিয়ে গেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একটি অংশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2021, 03:36 PM
Updated : 14 July 2021, 03:51 PM

বুধবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া।

তবে জমিয়তের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের নেতৃত্বাধীন অংশটি ২০ দলে থাকছে।

বাহাউদ্দিন বলেন, “সম্প্রতি শরিক দলগুলোর সাথে পরামর্শ ও মতামত না নিয়ে বিএনপির একতরফাভাবে নির্বাচনের বর্জনের ঘোষণা দেওয়া, বিএনপি মহাসচিবের শরীয়া আইনে বিশ্বাসী না হওয়ার বক্তব্য দেওয়া, দেশব্যাপী আলেম-উলামাদের জেলজুলুমের প্রতিবাদ না করা, দলের প্রয়াত নেতা আল্লামা নুর হোসাইন কাশেমীর ইন্তেকালের পর তার প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে সমবেদনা জ্ঞাপন না করা এবং তার জানাজায় অংশগ্রহণ না করায় জমিয়তের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।”

“উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করি, ২০ দলীয় জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করাই জমিয়তের জন্য কল্যাণকর,” বলেন তিনি।

পুরানা পল্টনে দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আগে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি যিয়াউদ্দীনের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি সভা হয়।

২০ দলীয় জোটে জমিয়তের দুটি অংশ ছিল। একটি অংশের নেতৃত্বে মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, আরেকটির নেতৃত্বে ছিলেন মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর কাসেমী মারা গেলে এই অংশটির নেতৃত্ব আসেন আল্লামা যিয়াউদ্দীন ও বাহাউদ্দীন জাকারিয়া।

জমিয়তের ওয়াক্কাসের অংশের দুজন নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত তাদের নেই।

জমিয়তের অনেকে হেফাজতে ইসলামেও যুক্ত। সাম্প্রতিক আটক অভিযানে তাদের অনেকে গ্রেপ্তার হওয়ায় চাপে পড়ে তা এড়াতে সরকারবিরোধী জোট থেকে তাদের বেরিয়ে আসার এই সিদ্ধান্ত বলে দলটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

জমিয়তের একাংশের জোট ছাড়া নিয়ে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি যতটুকু জানি, আজকে তাদের নেতৃবৃন্দ (জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একটি অংশ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে এসে এরকম একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

“আমরা জানি, তাদের নেতৃবৃন্দরা গ্রেপ্তার হয়ে আছেন, তাদের অনেক নেতা-কর্মীরা সরকারের নিপীড়নে চাকরি হারিয়েছেন, কর্মসংস্থান হচ্ছে না। তাদের এখন এরকম সিদ্ধান্তে যদি তাদের নেতৃবৃন্দরা কারামুক্ত হন এবং নেতা-কর্মীরা চাকরির সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পান, তাহলে আমরা খুশি হব।”

২০১২ সালে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের লক্ষ্যে চারদলীয় জোটের পরিসর বাড়িয়ে ১৮ দলীয় জোট গঠন করে বিএনপি। পরে আরও দুটি দল তাতে যোগ দিলে ২০ দল হয়।

গত কয়েক বছরে বিজেপিসহ কয়েকটি দল এই জোট ছেড়ে গেছে।