সজীব গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দাবি বিএনপির

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসে ভয়াবহ আগুনে প্রাণহানির ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সজীব গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2021, 01:18 PM
Updated : 10 July 2021, 02:33 PM

শনিবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বে থাকা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এই দাবি তোলেন।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই অগ্নিকাণ্ডের পর সেজান জুস ফ্যাক্টরির মালিক-কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক ভূমিকায় বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

“ফ্যাক্টরির মালিক মো. আবুল হাসেম আওয়ামী লীগ নেতা বলেই কি প্রশাসন এখন পর্যন্ত মালিক-কর্তৃপক্ষের গাফিলতি, অবহেলা ও উদাসীনতাকে আমলে নিচ্ছে না কিংবা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হচ্ছে না।”

অগ্নিকাণ্ডের জন্য অবহেলা ও উদাসীনতাকে দায়ী করে তিনি মালিক-কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার এবং নিহত ও আহতদের পরিবারকে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানান।

কারখানাটির অর্ধশতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু ও অনেকের আহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, “রূপগঞ্জে যেন লাশের মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে অঙ্গার হওয়া নিরীহ শ্রমিকদের এই করুণ পরিণতিতে সমগ্র জাতি হতবাক ও বিমূঢ় হয়ে পড়েছে।“

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে শুক্রবার শ্রমিক দলের সভাপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের খোঁজ-খবর ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন বলে সাংগঠনিক সম্পাদক উল্লেখ করেন।

‘প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে লুটপাটের মহোৎসব’

সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্স অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ভূমিহীন গরীব মানুষের জন্য নির্মিত ঘর, যা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে সেই ঘর নিয়েও সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, স্বেচ্ছাচারিতা ও দলীয়করণ হয়েছে।

“সেই ঘরগুলো হস্তান্তরের আগেই বা হস্তান্তরের পর দুই-তিন মাস যেতে না যেতেই যেভাবে ধসে পড়তে দেখা গেল- তাতেই প্রমাণিত হয় দেশে উন্নয়নের নামে হরিলুট চলছে, লুটপাটের মহোৎসব চলছে, এ যেন সীমাহীন লুটপাটের স্বর্গরাজ্য।”

তিনি বলেন, “বিএনপি গরীব ও ভূমিহীনদের মানুষের ঘর নিয়ে যারা মহাদুর্নীতি, লুটপাট ও চাঁদাবাজি করেছে তাদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছে। এবং ক্ষতিগ্রস্থ গরীব ভুমিহীনদের ঘর পুণঃনির্মাণ করে পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “গরীব মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বরাদ্দ তালিকায় নাম উঠানো হয়েছে। জায়গা-জমি-বাড়ি-ঘরের মালিক এমনকি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের নামও অর্থের বিনিময়ে বরাদ্দের তালিকায় তোলা হয়েছে।

“এমনকি আওয়ামী সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের উপজেলা-ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের কোটা নির্ধারণ রেখে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।“

প্রিন্স আরও বলেন, ‘‘এই ঘর নির্মাণের ইট, বালি, সিমেন্ট, রড. কাঠ, রং ইত্যাদি সরকারি দলের লোকদের কাছ থেকে চড়ামূল্যে নেয়া হয়েছে। তারা নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করায় আজকে প্রকল্পের এই দশা।

“ঘর নির্মাণে দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট ধরা পড়লেও সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা জিরো টলারেন্সের কথা বলেন। কিন্তু দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে জনগণের টাকা আত্মসাত করার সুযোগ করে দিয়ে নিজেরাই যে মহাদুর্নীতি করছে সেটা তারা বেমালুম ভুলে যান।“

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিকুল ইসলাম ও নাজমুল হাসান, ছাত্র দলের আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন