ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ না করে সংস্কার দাবি

ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে উন্নত ‘গতি নিয়ন্ত্রণ’ ব্যবস্থাসহ বুয়েট প্রস্তাবিত ‘রিকশা কাঠামো’ অনুমোদনের দাবি জানিয়েছে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2021, 01:36 PM
Updated : 23 June 2021, 04:16 PM

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যান, ইজি বাইক নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে এই দাবি তোলা হয়।

সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “সরকার গরিব মানুষের কথা না ভেবে শুধু গুলশান-বনানীর মানুষের কথা ভাবে। দেশের সাধারণ মানুষের মুখে অন্নের যোগান দিতে সরকার ব্যর্থ।

“রিকশাচালকরা নিজ উদ্যোগে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করেছে। সরকার আজ তাদের রুটি-রুজির অধিকার কেড়ে নিয়ে সর্বশান্ত করে পথে বসাচ্ছে।”

ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “মানুষ একবিংশ শতাব্দীতে এসে পশুর মত শ্রম দিতে পারে না। সরকার প্রয়োজনে ব্যাটারি রিকশার প্রয়োজনীয় আধুনিকায়ন ও পরিবর্তন করে লাইসেন্স দিতে পারে।

“শ্রমিকরা ভিক্ষা চাইতে আসে নাই, নিজেদের অধিকারের কথা বলতে আসেছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে প্রয়োজনে শ্রমিকরা সবকিছু বন্ধ করে দেবে।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গত রোববার ইঞ্জিনে রূপান্তর করা ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান। সেইসঙ্গে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে ইজিবাইকও বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন।

পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা জোরদার করা এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের সভা শেষে সেদিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

এর প্রতিবাদেই বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন। সারাদেশে ৫ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে পরে মিছিলও হয় বলে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এ সময় বুয়েট প্রস্তাবিত রিকশার কাঠামো, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি- এমআইএসটি উদ্ভাবিত গতি নিয়ন্ত্রক, উন্নত ব্রেকসহ ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স, রিকশা চালকের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং প্রকৃত রিকশা চালককে লাইসেন্স দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

আগামী শুক্রবার থানা ও উপজেলা পর্যায়ে শ্রমিক সমাবেশ; ২৭ জুন জেলা পর্যায়ে শ্রমিক সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ; একই দিন ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল ও স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সমাবেশ থেকে।

রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাদাৎ খাঁর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা আবদুল্লাহ কাফী রতন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় নেতা সাদেকুর রহমান শামীম ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস।

এদিকে সরকারি ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে আরেকটি সমাবেশ করেছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখা।

সমাবশে বলা হয়, ডিজিটাল যুগে এসে প্যাডেলচালিত রিকশার বদলে মানুষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে চাইবে- এটাই স্বাভাবিক। টাস্কফোর্সের সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত ‘অযৌক্তিক ও গণবিরোধী’।

সংগ্রাম পরিষদের নেতা তানভীর নাঈমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন, ইকবাল ও আলী আকবর।