মোমেনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি, বড় কিছু নয়: মান্নান

নিজ এলাকা সুনামগঞ্জের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিষয়ে সিলেটের সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের একটি ভূমিকা নিয়ে খেদ প্রকাশ করলেও সেটাকে ‘বড় করে’ দেখতে চান না পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2021, 01:10 PM
Updated : 22 June 2021, 01:57 PM

এবিষয়ে ফেইসবুকে দুই বন্ধুর পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যায় মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান।  

মান্নান বলেন, “ওনি নিজেইতো স্ট্যাটাসে বলেছেন, আমাদের ৫০ বছরের বন্ধুত্ব। বরং আরও দুই চার বছর বেশিও হতে পারে- এটা তেমন বড় বিষয়। আমাদের মধ্যে কোনও মতভেদ আছে এমন কোনও বিষয় নয়।

“এটা কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত নয়। এরকম এলাকাভিত্তিক কিছু টানাপড়েন মাঝে মাঝে হয়। আমার জেলার কিছু কিছু মাননীয় সাংসদগণ আমার কোনও বিষয়ের ওপরে মানসিকভাবে খুব একটা খুশি নন.. হতে পারে।”

রেললাইনের একটি রুট নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্য ও সাবেক আমলা এই দুই বন্ধুর মুখোমুখি অবস্থানের প্রকাশ প্রথম সামনে আসে ১৪ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফেইসবুক পোস্ট থেকে।

সেখানে মোমেন দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরে মান্নানের সঙ্গে তার ‘দ্বন্দ্ব রয়েছে’ এবং তার কারণে ‘সিলেটের উন্নয়ন ব্যাহত’ হচ্ছে বলে ‘অপ্রচার’ সম্পর্কে সতর্ক করেন।

 

সেই স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে রোববার পরিকল্পনামন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাল্টা ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়।

তা থেকে জানা গেল, সুনামগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেললাইন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের ভূমিকায় আহত বোধ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

ফেইসবুকে তিনি লিখেছেন, দীর্ঘ বন্ধুত্ব, মন্ত্রিসভার সহকর্মী হয়েও তার নিজের জেলা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ভূমিকা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

সেখানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “এটা সত্য যে ড. মোমেনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘ ৫০ বছরের। কিন্তু তিনি সুনামগঞ্জের পাঁচজন সংসদ সদস্যকে সমর্থন করে রেলমন্ত্রীর কাছে যে আধা সরকারি পত্র (ডিও) দিয়েছেন, সেটি আমাকে বিস্মিত করেছে। তিনি যে পাঁচজন এমপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, সেখানে একজন জাতীয় পার্টির এমপিও রয়েছেন। আব্দুল মোমেন ভালো করেই জানেন, আমিও (মান্নান) সুনামগঞ্জের একজন সংসদ সদস্য। সুনামগঞ্জের সঙ্গে ছাতকের রেললাইন নির্মাণ নিয়ে তিনি যেমন অবগত, ঠিক তেমনি বিষয়টি আমিও অবগত। আমি যতটুকু জানি, তার বর্ণিল জীবনে তিনি কখনো সুনামগঞ্জে যাননি। সুনামগঞ্জে কখনো তাঁর পা পর্যন্ত পড়েনি। অথচ তিনি রেললাইন নির্মাণ নিয়ে একটি পক্ষের অবস্থান নিয়েছেন।

“অন্য কেউ হলে এই পরিস্থিতিতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন; বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইতেন। কিন্তু আমাদের দীর্ঘ ৫০ বছরের বন্ধুত্ব একই সঙ্গে আমরা দুজনেই মন্ত্রিসভার সদস্য অথচ তিনি আমার সঙ্গে এ বিষয়ে এতটুকু যোগাযোগ করেননি। আমার সঙ্গে কথা না বলে অন্য পাঁচজন সংসদ সদস্যের পক্ষ নিয়ে রেলমন্ত্রীকে ডিও লেটার পাঠানো কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’

মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রীর সামনে প্রসঙ্গটি তোলা হয়।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি শুধুমাত্র এই কারণে বেশি আশ্চর্য্য হয়েছি, যে আমার সাথে কথা না বলে বা আমাকে জিজ্ঞেস না করে ….. আই ওয়াস শকড।”

“ভয়ংকর কিছু হয় নাই। আমাদের মধ্যে একটা ভূল বুঝাবুঝি হয়েছে। এটা নিয়ে আমাদের উভয়ের মধ্যে বড় কোনও মতভেদ আছে বলে আমি মনে করি না।”

এসময় ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মোবাইল চালু না থাকায় সেটাকে খুঁজে বের করা যাচ্ছে না বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, “মোবাইলটিতে এখন চার্জ নেই। যার কাছে আছে সে মোবাইলটি আর চার্জ করছে না। মোবাইলটি এখন ডেড হয়ে আছে। ডেড বডি খুজে পাওয়া মুশকিল।”

“এক্সপার্টরা (বিশেষজ্ঞরা)  বলেছেন  মোবাইলটি ডেড হয়ে থাকার কারণে খুজে বের করা যাচ্ছে না। এটা আর পাওয়া যাচ্ছে না।”