ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধের প্রতিবাদ

ইঞ্জিনে রূপান্তর করা ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান বন্ধ এবং ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2021, 11:57 AM
Updated : 21 June 2021, 11:57 AM

পৃথক বিবৃতিতে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ এবং রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সরকারি এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে।

রোববার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; একইসঙ্গে ইজিবাইকও নিয়ন্ত্রণ করা হবে যা ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

এর প্রতিবাদে সোমবার এক বিবৃতিতে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন ও সদস্য সচিব ইমরান হাবিব রুমন এক বিবৃতিতে বলেন, সরকারের ওই সিদ্ধান্ত ‘অযৌক্তিক, গণবিরোধী ও তুঘলক ‘।

বিবৃতিতে বলা হয়, “গত দেড় বছরে করোনাভাইরাস মহামারি ও টানা লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ নানা পেশার শ্রমিক এবং কর্মহীন, বেকার ও ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকের পাশে সরকার ও মালিক শ্রেনী দাঁড়ায়নি। করোনা মহামারিতে নতুন করে আরো ২.৫ কোটি মানুষসহ দেশের ৫০ ভাগের উপরে মানুষ যখন দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে, সেই সময়ে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে কর্মরত ৫০ লাখ রিকশা, ব্যাটারি রিকশা ও ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন  চালককে বেকার ও কর্মহীন করার চক্রান্ত চলছে।”

বিবৃতিতে বলা হয়, টাস্কফোর্সের সভায় ব্যাটারি রিকশার ব্রেক পদ্ধতি বা তার কাঠামোগত দু্র্বলতার কারনে দুর্ঘটনার কারন দেখিয়ে তা রাস্তা থেকে থেকে উচ্ছেদের কথা বলছেন। কিন্ত সেই কাঠামোগত দুর্বলতা কাটানোর কোন সুপারিশ না করে রাস্তা থেকে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত অনেকটা মাথা ব্যথার কারনে মাথা কেটে ফেলার মত।

সংগ্রাম পরিষদ জানানয়, তারা গত ৮ বছর ধরে নকশা আধুনিকায়ন ও নীতিমালা প্রনয়ণ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকসহ যান্ত্রিক যানবাহনের লাইসেন্স প্রদানসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

বিবৃতিতে ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক চলাচাল বন্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং নকশা আধুনিকায়ন ও নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকসহ যান্ত্রিক যানবাহনের লাইসেন্স প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।

এদিকে রিকশা-ভ্যান নিষিদ্ধের ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়েছে আরেক বিবৃতিতে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাদৎ খাঁ এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন, “যখন ব্যাটারি রিকশা বিক্রি হলো, যন্ত্রাংশ আমদানি করা হলো তখন সরকার কোনো ব্যাবস্থা না নিয়ে এখন দরিদ্র মানুষের রুটি-রুজি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।”

তারা অবিলম্বে বুয়েট প্রস্তাবিত রিকশাবডি, গতি নিয়ন্ত্রক, উন্নত ব্রেকসহ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় চলতে দেয়ার দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, লাখ লাখ রিকশা চালক চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অথবা সম্পত্তি বিক্রি-বন্ধক রেখে ব্যাটারি রিকশা কিনেছে। এই রিকশা শ্রমিকদের অমানবিক শ্রম লাঘব করেছে। উপরন্তু গণপরিবহন হিসেবে এখনও দেশের শহর কিংবা গ্রামে রিকশা অপরিহার্য। এ অবস্থায় কোনো যুক্তিতেই সরকার গরিব ব্যাটারি রিকশাচালকদের সর্বশান্ত করে পথে বসিয়ে দিতে পারে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ব্যাটারি রিকশা বন্ধের প্রতিবাদে এবং বুয়েট প্রস্তাবিত রিকশাবডি, গতি নিয়ন্ত্রক, উন্নত ব্রেকসহ ব্যাটারি চালিত রিকশা রাস্তায় চলতে দেয়ার দাবিতে আগামী ২৩ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ ও মিছিল করবে শ্রমিক ইউনিয়ন।