শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তাদের লক্ষ্য অস্থিতিশীলতা তৈরি করে দেশের ইমেজ নষ্ট করা এবং দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করা।”
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ‘অন্ধকার’ বলেই বিএনপি দেশের আলোকিত অভিযাত্রা থামিয়ে দিতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দেশ-বিদেশে বিএনপি অর্থ বিনিয়োগ করছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও সম্ভাবনা নষ্ট করে দিতে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “১২ বছর আগের বাংলাদেশ ও আজকের বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অর্জনে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
এসময় তিনি জানান, কর্ণফুলী টানেলের ৬৯ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। আগামী বছর প্রধানমন্ত্রী এর উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা যায়। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেসওয়ে করার কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা চলছে।
করোনা প্রতিরোধ এবং উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে এ দুটো কাজে স্বেচ্ছাসেবক লীগ গতিশীল হয়ে দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করতে নেতাকর্মীদের জনবান্ধব ও গণমুখী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অর্জন করার আহবান জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়া, এর সঙ্গে পরাজয়ের কোনো গ্লানি নেই, তেমনি কারো বিজয়েরও উল্লাস নেই।”
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “পরপর তিনবার দল রাষ্ট্রক্ষমতায়। ফলে সুযোগ সন্ধানী বহু অনুপ্রবেশকারী নৌকায় উঠতে চায়। সবাইকে নৌকায় উঠতে দেওয়া যাবে না।”
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “উগ্র জঙ্গিবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। যে ভার্চুয়াল লড়াই তারা করতে চায় তা প্রতিহত করতে হবে।”
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “তথ্য যোগাযোগের সমৃদ্ধি কাজে লাগিয়ে একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কে দিচ্ছে। ভার্চুয়াল জগতে যে ঘৃণা বিদ্বেষ, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে নেতাকর্মীদের কাজ করে যেতে হবে।”
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ। প্রধান বক্তা ছিলেন সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু।
মহমারীতে ভার্চুয়াল সম্মেলনে হাজারো নেতাকর্মী
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই প্রায় দুই দশক পর চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা প্রথম ভার্চুয়াল সাংগঠনিক সম্মেলন বলে দাবি করা হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি, উদ্বোধক ও বিশেষ অতিথিরা প্রায় সবাই ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
সম্মেলন সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ করতে ও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ে সচেতন থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলন চলাকালে মিলনায়তন থেকে ডেলিগেট কার্ড পাঠিয়ে বাইরে থেকে নেতাকর্মীদের প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে সর্তক করেন নগর কমিটির আহ্বায়ক এএইচএম জিয়া উদ্দিন।
সভাপতির বক্তব্যে জিয়া উদ্দিন বলেন, “আমরা সংগঠনকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে ও সুসংগঠিত করতে কাজ করেছি। তখন অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগকে নিয়ে কটুক্তি করেছিলেন। আজ প্রমাণ হয়েছে আমরাই যুব সংগঠন।”
নগর কমিটির সদস্য সাদেক হোসেন ও আনোয়ারুল ইসলামের পরিচালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল কবীর। সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন যুগ্ম আহ্বায়ক কেবিএম শাহজাহান।
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রমুখ।