নেতা-কর্মীদের ‘আশাহত’ না হতে বললেন ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতা-কর্মীদের ‘আশাহত’ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে আন্দোলনে ‘জয়ী’ হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবদেকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2021, 03:38 PM
Updated : 8 June 2021, 03:38 PM

মঙ্গলবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এমন মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

এতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে অনেকে বলে, কী ভাই কিছু হবে? এটা যখনই মনে করবেন- তখনই বুঝবেন যে, আপনি শেষ। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব একটা শ্লোগান দিচ্ছেন না যে, যদি তুমি ভয় পাও তাহলে তুমি শেষ, আর তুমি যদি রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ।

“একজন মানুষ মরে যায় কখন? সে যখন আশা হারায়। হোপস, এই হোপস নিয়ে আমাদের থাকতে হবে। একটি সত্য আপনাদের মনে রাখতে হবে যে, এই দেশের শতকরা ৯০ জন মানুষ আপনাদের পক্ষে আছে, যেখানেই যাবেন দেখবেন...। একটা কথা আমি বলতে পারি, আমরা জয়ী হবোই। আমাদেরকে সামনের দিকে এগুতে হবে।”

নিজের মোবাইল ফোন দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘অনেক সময় নাই, আমি আপনাদের দেখাতে পারতাম যে, একজন রিকশাওয়ালা কি বলছে? একজন ঠেলা গাড়ি চালায় সে কী বলছে? গাইবান্ধাতে একজন সবজী বিক্রি করে সে কী বলছে?

“এগুলো কোনো কিছু বানানো নয়, তাদের মনের কথাগুলো তারা বলছে যে, এই সরকার আমাদের কী দেখবে? নিজের দেখেই তো কুল কিনারা পায় না। আমাদের তো দেখে না কেউ?”

সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই যে মহাখালীতে সাততলা বস্তি পুড়ে গেল- তাদের জন্য কোনো প্রজেক্ট তৈরি করে না।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য খন্ডন করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘গণতন্ত্রকে হত্যা করছে কারা? আওয়ামী লীগই গণতন্ত্রকে বার বার হত্যা করছে। যে সংবিধান ১৯৭২ সালে আপনাদের দ্বারা তৈরি, সেই সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে সব কিছু শেষ করে দিয়েছে কে? আওয়ামী লীগ আপনারা।

“যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আপনারা ১৭৩ দিন হরতাল করলেন, লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে মারলেন, বুকের উপরে উঠে নাচলেন, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কে সরাল? আওয়ামী লীগ, এই শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিলেন আপনারা।”

ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার নির্বাচনের অধিকার নেই অভিযোগ করে তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, সেই পথ রুদ্ধ করবেন না। তার পরিণতি গোটা বিশ্বের জানা।

“গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হতে হবে। তা না হলে এর ফল খুব খারাপ।”

দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘বাতিঘর’ উল্লেখ করে তার আদর্শ অনুসরণ করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দেন তিনি।

উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম নকির সঞ্চালনায় সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ ও শহীদুল ইসলাম বাবুল, যুব দলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, মহানগর উত্তরের আতিকুল ইসলাম মতিন, জিএম শামসুল হক, এবিএমএ রাজ্জাক প্রমুখ বক্তব্য দেন।