স্বাধীনতার ঘোষকের আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক: রেহমান সোবহান

ছয় দফার পথ ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব জনগণের ধারাবাহিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতা ঘোষণার আগেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তি তৈরি হয়ে গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2021, 06:22 AM
Updated : 11 June 2021, 01:37 PM

উত্তাল সেই সময়ের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে সোমবার এক ওয়েবিনারে বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের এই সদস্য বলেন, একাত্তরের ৫ মার্চের আগেই স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

”এটা যখন আজকাল আলোচনা হয়, কে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, এসব তো অপ্রাসঙ্গিক কথা। কারণ দেশ ইতোমধ্যে স্বাধীন হয়েই গেছে। একজন মাত্র লোক যোগ্য ছিলেন, যিনি সেই স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেবেন, সেটা ছিলেন বঙ্গবন্ধু।”

পাকিস্তানি শাসন-শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ডাকা এক জাতীয় সম্মেলনে পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন।

ছয় দফার মূল বক্তব্য ছিল: প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দুটি পৃথক ও সহজ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। সরকারের কর, শুল্ক ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে, দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার আলাদা হিসাব থাকবে এবং পূর্ববাংলার প্রতিরক্ষা ঝুঁকি কমানোর জন্য এখানে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর থাকবে।

সেই ৬ দফা দাবি আদায়ে ৭ জুন ঢাকাসহ সারা বাংলায় আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল পালিত হয়, সূচনা হয় ব্যাপক গণজাগরণের।

সেদিন হরতালে টঙ্গী, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তৎকালীন পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ বাঙালি শহীদ হন, গ্রেপ্তার হন অনেকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরে ৬ দফার পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেন এবং বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে ৬ দফার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

স্বাধিকারের এই আন্দোলন ও আত্মত্যাগের পথ বেয়েই অর্জিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ।

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবসের স্মরণে সোমবার আয়োজিত বিশেষ ওয়েবিনারের শিরোনাম ছিল ‘৬ দফা বাঙালির মুক্তি সনদ’।

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সোবহান ছয় দফার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে তাদের অধিকার না দেওয়া এবং বৈষম্যের কারণে প্রণয়ন করা হয়েছিল ছয় দফা।

”সামরিক-আমলাতন্ত্র ও মুষ্টিমেয় জমিদারের হাতে ছিল পুরো পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ। এ কারণে আমরা দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলাম। সম্পদ পাকিস্তানের এই অংশে পাঠানোর কিংবা স্বায়ত্বশাসন দেওয়ার। স্বায়ত্বশাসনকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু বহু আলোচনার প্রেক্ষাপটে ছয় দফা ঘোষণা করেন।”

ছয় দফা ঘোষণার পর বাঙালির অধিকার আন্দোলন ক্রমান্বয়ে গ্রামেগঞ্জে এবং সব পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “এর আগে আন্দোলন মূলত ছাত্রসমাজকে কেন্দ্র করে মধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ছয় দফার পর এটা সব পর্যায়ে ছড়িয়ে যায়।

”এ কারণে পাকিস্তানিরা এটাকে সহজভাবে নেয়নি। তারা নির্যাতন চালায়, অনেককে হত্যা করে এবং গণহারে গ্রেপ্তার করা হয়। জনগণের রাস্তায় নেমে আসায় পাকিস্তানিরা ভীত হয়ে পড়েছিল।”

বঙ্গবন্ধুর নামেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠিত হচ্ছিল জানিয়ে রেহমান সোবহান বলেন, “উনার নামেইতো আমি নয় মাস আন্তর্জাতিকভাবে আন্দোলন করেছি। কারণ তিনি মার্চ মাসেই আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।

”পুরো পৃথিবীর সাংবাদিক সমাজতো ঢাকায় বসে ছিল। সে কারণে বাংলাদেশ কি, সেটা আমাদের প্রচার করার দরকার ছিল না। কারণ সবাই এটা জানত।”

ছয় দফা ধরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে যাওয়ার স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, “যেখানেই আমরা গিয়েছি, ট্যাক্সি ড্রাইভার হোক, রেস্তোরাঁয় বেয়ারা হোক, সবাই জানত, শেখ মুজিব একটা ক্যাম্পেইনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।”

বঙ্গবন্ধুর সফরসঙ্গী হয়ে ডেমরা থেকে নৌকায় কালিগঞ্জ যাওয়ার একটি ঘটনার কথাও আলোচনায় বলেন রেহমান সোবহান বলেন, ওই এলাকায় এক লাখের মত শ্রমিক জড়ো হয়েছিল। যেখানেই তারা গেছেন, সেখানে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি দেখেছেন।

”আমার বামপন্থি বন্ধুদের তখন বললাম- তোমরাতো বলেছিলে বঙ্গবন্ধু মধ্যবিত্ত শ্রেণির নেতা, ওই দেখো জওয়ান-বুড়ো থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের মানুষ এখানে জড়ো হয়েছে।”

আন্দোলন তীব্রভাবে চললেও পাকিস্তানিরা ছয় দফা ধরে আলোচনায় কখনো আগ্রহী ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, “শেষ মুহূর্তে তারা আলোচনায় আসে, ২৫ মার্চের আগে আগে। সে সময় তারা এটাকে গণহত্যা চালানোর প্রস্তুতি হিসাবে সৈন্য সমাবেশের জন্য ধুম্রজাল হিসাবে ব্যবহার করেছিল।”

রেহমান সোবহানের ভাষায়, ছয় দফা বাঙালির স্বশাসনের ইশতেহারে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন অভিজাত শ্রেণি কোনোভাবে স্বায়ত্বশাসনকে মেনে নিতে চায়নি।

“বঙ্গবন্ধু অন্য কোনো বাঙালি নেতার মত ছিলেন না। তারা বুঝে গিয়েছিল, তিনি ছাড় দেবেন না। কারণ তিনি তার অবস্থানে দৃঢ় ছিলেন। এক্ষেত্রে জনগণের ম্যান্ডেট তার ছিল। ওই পর্যায়ে গিয়ে তারা বুঝল, হত্যাযজ্ঞ চালানো ছাড়া উপায় নাই।”

সে সময়ের তরুণ ছাত্রনেতা, বর্তমানে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ওয়েবিনারে বলেন, মাওলানা ভাসনী, আতাউর রহমান খানসহ অন্য নেতাদের মধ্য থেকে বঙ্গবন্ধুই বাঙালি জাতির নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। এই ছয় দফা আন্দোলনে তার দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক দৃঢ়তার কারণে মানুষ আকৃষ্ট হয়।

আমু বলেন, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টির আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু মুসলিম লীগের অসাম্প্রদায়িক বলয়ে রাজনীতি করতেন। অবিভক্ত ভারতে স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের পক্ষের আন্দোলনগুলোতে বঙ্গবন্ধু যে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিতেন, তারা কমিউনিস্ট ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করত। খাজা নাজিম উদ্দিন শাহ আজিজের নেতৃত্বে একটি মুসলিম ছাত্রলীগ ছিল ঢাকাকেন্দ্রিক। আর বঙ্গবন্ধু কলকতায় সোহরাওয়ার্দী ও নুরুদ্দিনদের সঙ্গে কাজ করতেন।

পরবর্তীতে ঢাকায় গঠিত হওয়া পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ও আওয়ামী মুসলিম লীগ নামগুলো কীভাবে হল সে কথাও বলেন আমু। 

“পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম ছাত্রলীগ, আওয়ামী মুসলিম লীগ- এই নামগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে বঙ্গবন্ধু বলতেন, তখন মুসলমান, কায়েদে আজম ও পাকিস্তান একাকার ছিল। ওই সময় মুসলিম শব্দ না দিলে তখনই পাকিস্তানে আমাদের রাজনীতির কবর রচনা হত। সুতরাং অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হয়।”

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শের মানুষদের পাকিস্তানের জন্মের সূচনা থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা সন্দেহের চোখে দেখেছে এবং বঞ্চিত করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমু।

তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে, পাকিস্তান ইস্যুতে নির্বাচনের আগে কেবল বাংলাদেশেই সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে মুসলিম লীগ জয় পেয়েছিল। বাকি চারটি রাজ্যে মুসলিম লীগ জেতেনি। অথচ ৪৭ সালে সরকার গঠিত হলে সোহরাওয়ার্দীকে সরিয়ে খাজা নাজিম উদ্দিনকে প্রাদেশিক সরকারের প্রধান করা হয়।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “সোহরাওয়ার্দী সেসময় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি জিন্নাহ ও গান্ধীকে বিষয়টি বোঝাতেও সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু দুই নেতার অনুসারীরাই তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে ওই অবস্থান থেকে সরিয়ে ফেলে। ওই সময় থেকেই পাকিস্তানি নেতৃত্ব সোহরাওয়ার্দীকে অবিশ্বাস করতে শুরু করে।

বঙ্গবন্ধু শুরু থেকেই পাকিস্তানি নেতৃত্বকে মেনে নিতে পারেননি জানিয়ে আমু বলেন, “তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় শুরু থেকেই ছিল পাকিস্তানি নেতৃত্বের বিরোধিতা। সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকার গঠন করলেও বঙ্গবন্ধু সেই সরকারে যোগ দেননি। তিনি পাকিস্তানের কাদা গায়ে মাখেননি।”

ছয় দফা প্রস্তাব যে আগে থেকেই জাতির পিতার রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ছিল, সে কথাও বলেন বঙ্গবন্ধুর অন্যতম এই রাজনৈতিক সহচর।

তিনি বলেন, ১৯৬৬ সালের আগে ১৯৬৪ সালের ৫ জুন আওয়ামী লীগের জরুরি বৈঠকে ১১ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু। সেই ১১ দফার আলোচনার মধ্যেই ছয়  দফার বিষয়গুলো রয়েছে।

”ছয় দফা আন্দোলনের মর্মার্থ পাকিস্তানিরাও বুঝেছিল, আর বাংলার মানুষও অনুধাবন করতে পেরেছিল। তাই এই প্রস্তাবের পর একদিকে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পূর্বপাকিস্তানের জানগণও তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করিয়ে এনেছেন।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, “জাতি একটি আবেগি ধারণা, আর রাষ্ট্র হচ্ছে কঠিন বাস্তব। ছয় দফায় জাতি হিসাবে আমাদের আবেগ-অনুভূতির সূচনা হয়েছিল, ভাষা আন্দোলন থেকে পরবর্তী সময়ে, ছয় দফা একটি কংক্রিট ধারণা— বাংলাদেশ রাষ্ট্র কেমন হতে পারে।”

একাত্তর সালে যা হবে, তার কাঠামো পাঁচ বছর আগেই ছয় দফার মধ্যে দেখা গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেই বাংলাদেশের ভিত্তি কেমন হবে, সেই আবছায়া বাংলাদেশ কেমন হবে, তার কাঠামো বঙ্গবন্ধু ৬৬ সালে ছয় দফার মাধ্যমে দেখিয়েছেন।”

অধ্যাপক শান্তনু বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা এ অঞ্চলের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ‘টেক্সটবুক উদাহরণে’ পরিণত হয়েছে। ছয় দফার শুরুতে তিনি লাহোর প্রস্তাবের কথা বললেও লাহোর প্রস্তাবের চেতনার সঙ্গে তিনি একমত ছিলেন না।

”ছয় দফায় যে দাবিগুলো করা হয়েছে, তাতে লাহোর প্রস্তাব মতে ফেডারেল রাষ্ট্র তো দূরের কথা রাজ্যভিত্তিক কনফেডারেশনও টেকে না, তেমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।”

সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় আলোচনার শুরুতে সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে আইয়ুব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু যে ছয় দফা প্রস্তাব তুলেছিলেন, তার প্রভাব অল্প সময়ের মধ্যে রাজনীতিতে পড়েছিল। তার কয়েক মাস পর ৭ জুন ছয় দফার পক্ষে যে হরতাল হয়েছিল, গ্রামাঞ্চলেও তা পালিত হয়েছিল। কলেজের ছাত্র হিসাবে সেই হরতালে তিনিও ছিলেন।

“ছয় দফার প্রভাব এত বেশি ছিল যে, মাত্র চার বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পায়।”

এদিকে ছয় দফা দিবস উপলক্ষে রাতে 'ঘুরে দাঁড়ানোর দিন' শীর্ষক আরেকটি আলোচনা সভার আয়োজন করে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক-কলামিস্ট ও একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ছয় দফা আন্দোলনের সূচনা হয় ঝটিকা সফরের মধ্য দিয়ে। ৩২টি জেলায় জনসভায় অংশ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

”এ সময়ে তিনি যেখানে গেয়েছেন, গ্রেপ্তার হয়েছেন, আবার আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। জামিন নিয়ে আবার সফরে গেছেন।”

আন্দোলন চলার মধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছিল; কিন্তু তিনি যে তার অবস্থান থেকে নড়েননি, সে কথাও বলেন গাফফার চৌধুরী।

বঙ্গবন্ধুর অসংখ্য আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ছয় দফাকে বলা হয়েছে ম্যাগনাকার্টা। আজ থেকে ৮ শ বছর আগে, ব্রিটেনের জনগণ একটা সনদ তৈরি করেছিল, রাজা সেটায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিল। সেভাবে বাঙালির মুক্তির সনদ ছিল ছয় দফা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আন্দোলনে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”

সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের এম নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ আলোচনায় অংশ নেন।