যে যুক্তিতে সরকার খালেদা জিয়ার আবেদন নাকচ করেছে, তা ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলেও মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, “একেবারেই অগ্রহণযোগ্য, খোঁড়া যুক্তি। তারা বলেছেন যে, সাজাপ্রাপ্তদের বিদেশে পাঠানোর নজির নেই। এটা তারা ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন।”
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সেই বড় যে হৃদয়, সেটা আপনাদের নাই। শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের এটা ছিল। উনিও তার অনেক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে এসমস্ত সুবিধা দিয়েছেন, ছেড়ে দিয়েছেন, মুক্তি দিয়েছেন এবং তাদেরকে হেলপও করেছেন।
“কিন্তু আপনাদের সেই বদান্যতা নেই। থাকলে বেগম খালেদা জিয়াকে অনেকদিন আগে আপনারা ছেড়ে দিতেন, আপনারা রাজনীতি করতে দিতেন।”
বিএনপি চেয়ারপারসনকে আদৌ বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন সরকারের একাধিক মন্ত্রী। খালেদার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি ‘রাজনীতি করছে’ বলেও অভিযোগ করে আসছিলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা।
তাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “যেসব কথা বলা হচ্ছে এখন, এগুলো শুধু অশালীন নয়, অমার্জিত এবং অগ্রহণযোগ্য। আমি আবারো বলছি, দয়া করে সংযত হোন, দয়া করে আপনাদের কথা- এটা একটু কমান।”
“যাচ্ছে তাই বলবেন, আর আপনারা মনে করবেন সবসময় পার পেয়ে যাবেন... । এভরি থিং ইজ বিং নোটেড, এ দেশের মানুষ সময় মত জবাব দেবে।”
খালেদা জিয়াকে এখনও কার্যত ‘অন্তরীণ করে’ রাখা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া- এটাই সরকারের লক্ষ্য। তার দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া…।”
সরকারের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, “আমরা কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদনটা করি নাই। আবেদনটা করেছেন পরিবার।… তারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না, যারা আবেদনটা করেছেন। সেখানে সবাই আশা করেছিল, এমনকি বিদেশিরা পর্যন্ত ধারণা করেছিল তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে সুযোগ দেওয়া হবে। সেটা তারা দেয় নাই।’’
খালেদা জিয়া সম্পর্কে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এইসব মন্ত্রী, যারা ওইভাবে ক্ষমতায় না এলে কোনোদিন আপনার এমপি হওয়ারও স্বপ্ন দেখতে পারত না, তারা আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে ধরনের উক্তি করছেন, তা থেকে বিরত থাকবেন। ভবিষ্যতে এই ধরনের উক্তি করলে তার যথাযোগ্য জবাব এদেশের জনগণ আপনাদেরকে দেবে।”
নিপুণ রায় চৌধুরীসহ বিএনপির সকল কারাবন্দি নেতা-কর্মী এবং ‘আলেম-উলামাদের’ ঈদের আগেই নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি এই সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।