দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদনটি নাকচ করা প্রসঙ্গে সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে আইনি বাধার কথা আইন মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে তার ব্যত্যয় ঘটিয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে চিকিৎসার নজির এই দেশে রয়েছে।
“সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার পরও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবকে ১৯৭৯ সালে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানি পাঠানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে মানবিক বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছিলে সবার আগে। বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও তেমনটি আমি আশা করেছিলাম। কিন্তু গতকাল সরকারের পক্ষ থেকে যা করা হয়েছে তাতে আমি বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন।”
সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তাধীনে মুক্ত থাকার মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে ভাই আবেদন জানালেও রোববারই তা নাকচ করে দিয়েছে সরকার।
কেন বিএনপি প্রধানকে বিদেশে নেওয়ার অনমুতি দেওয়া যায়নি তার কারণ ব্যাখ্যায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় ইতোমধ্যে (খালেদার সাময়িক মুক্তির) সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই শর্তগুলো শিথিল করে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আবেদনে অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
বিবৃতিতে মান্না বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার ফুসফুস ও পেটে পানি এসেছে, যা ৭৬ বয়সী একজন মানুষের জন্য খুবই মারাত্মক। এই মুহূর্তে উনার সার্বক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে নাজুক অবস্থা তাতে দেশে থেকে উনার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
“এই পরিস্থিতিতে মানবিক দিক বিবেচনায় সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ও একজন বীর উত্তমের স্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু এই ক্ষেত্রেও সরকার তাদের প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বের হতে পারল না।”
সরকার মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক।
অন্যথায় সঠিক চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় সরকারকে বহন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরেক বিবৃতিতে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, “আদালতের মাধ্যমে জামিনবঞ্চিত বেগম জিয়াকে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে জেলের বাইরে, নিজ বাড়িতে সুযোগ দিয়েছে সরকার। এজন্য সরকার অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। একই পদ্ধতিতে সরকার, আইনি জটিলতাকে পাশ কাটিয়ে বেগম জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিতে পারতেন বা এখনও পারবেন। আমরা সেই আবেদনই করছি।”