জিয়া যখন গাছ কেটেছিলেন, পরিবেশবাদীরা কোথায় ছিলেন: কাদের

স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্মৃতিকেন্দ্র গড়ার জন্য গাছ কাটা নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন না হওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 09:38 AM
Updated : 8 May 2021, 10:17 AM

সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান যখন শিশুপার্ক বানানোর জন্য উদ্যানের গাছ কেটেছিলেন, তখন পরিবেশবাদীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

শনিবার ঢাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানটি ‘দর্শনীয় করে তোলার জন্য’ ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর বাস্তবায়ন হলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম সেখানে ইতিহাসের কথা জানতে পারবে। 

"রেসকোর্স ময়দানে প্রথম গাছ লাগিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এটাকে উদ্যান হিসেবে বঙ্গবন্ধুই সৃষ্টি করেছিলেন। ৭ মার্চের ভাষণের স্থান ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সারেন্ডার করার স্মৃতি মুছে ফেলার জন্য জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি হয়ে এই উদ্যানের অধিকাংশ জায়গা জুড়ে শিশুপার্ক করেছিল।

“পরিবেশবাদীরা তখন প্রশ্ন তোলেন নাই কেন? কারো মুখে একটা কথাও সেদিন আমরা শুনতে পাইনি। সৌন্দর্য বর্ধনের নামে এই ঢাকা শহরে রাস্তার পাশ থেকে কত সুন্দর সুন্দর গাছ কেটে ফেলা হয়েছিল, উজাড় করে ফেলা হয়েছিল এই নগরীর সৌন্দর্য।”

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু গাছ ইতোমধ্যে কাটা পড়ছে। কাটার জন্য আরও কিছু গাছ চিহ্নিত করা হয়েছে।

সেখানে ‘রেস্তোরাঁ ও হাঁটার পথ’ নির্মাণের জন্য গাছ কাটা হচ্ছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। গত কয়েকদিন ধরেই সেখানে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন প্রতিবাদকারীরা।  

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, ঐতিহাসিক এই উদ্যানে ‘আন্তর্জাতিক মানের স্মৃতিকেন্দ্র’ গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘কিছু গাছ’ কাটা হয়েছে। গাছ কাটা নিয়ে ‘খণ্ডিত তথ্য’ প্রচার হওয়ায় জনমনে ‘বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে’।

এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “উদ্বিগ্ন হবেন না। সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।"

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (ফাইল ছবি)

‘এ মুহূর্তে বেঁচে থাকাটাই জরুরি’

সংবাদ সম্মেলনের আগে ঢাকা সড়ক জোন, বিআরটিসি ও বিআরটিএ এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এক মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের।

ঈদ সামনে রেখে পরিবহন ও যাত্রীদের চাপ থাকায় ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে চাপ বেড়ে যায়, তাই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় করে জনভোগান্তি লাঘবের পদক্ষেপ নিতে বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বর্ষার আগেই রাস্তা মেরামতের কাজগুলে করতে হবে। চলমান গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শেষ করতে হবে। পুরাতন কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোন প্রকল্প হাতে নেবেন না।"

লকডাউনের মধ্যেও গত কয়েক দিনে ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপের বিষয়টি তুলে ধরে সবাইকে সতর্ক করেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে, শপিংমল, মার্কেটগুলোতেও একই অবস্থা। গত কয়দিনে করোনা সংক্রমণ হারের যে নিম্নমুখী প্রবণতা, সেটাকে আবারও বাড়িয়ে দিতে পারে এ ধরনের পরিস্থিতি।

“আগে জীবন পরে জীবিকা, এই মুহূর্তে বেঁচে থাকাটাই জরুরি। বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে অনেক আনন্দ উৎসব করা যাবে, কাজেই এবার অন্তত সকলে মিলে ত্যাগ স্বীকার করি। আসুন সকলে মিলে প্রাণঘাতী এই করোনাকে প্রতিরোধ করি।"