‘কেয়ারফুলি’ দেখিনি, তবে ‘পজিটিভলি’ দেখছি: খালেদাকে বিদেশ নেওয়ার আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছে, সেটা খুঁটিয়ে না দেখলেও সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিতে তা দেখছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2021, 06:38 PM
Updated : 5 May 2021, 06:38 PM

বুধবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বোনকে বিদেশ নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। এরপর মন্ত্রী সাংবাদিকদের ওই কথা জানান।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বর্তমানে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শ্বাসকষ্টের কারণে সিসিইউতে থাকা খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি না ঘটায় তার চিকিৎসকরা বিদেশ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।

খালেদা জিয়াকে তার পরিবার কোন দেশে নিতে চাইছে- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা  পত্রটা খুব কেয়ারফুলি দেখতে পারিনি। আসার পরই প্রসেস করতে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

খালেদার পরিবারের আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেখান থেকে মতামত এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার আবেদনটি তারা ‘পজিটিভলি’ দেখছেন।

“প্রধানমন্ত্রী এসমস্ত বিষয়ে অত্যন্ত উদার এবং আমরা পজেটিভলি দেখার চেষ্টা করব অবশ্যই। পজিটিভলি  দেখছি বলেই তাকে (খালেদা জিয়া) দণ্ডাদেশ স্থগিত করে চিকিৎসার সুবিধা আমরা করে দিয়েছি। যাতে উন্নত চিকিৎসা পায়, তার পছন্দমতো।”

দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যাওয়ার পর গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে সরকার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেয়।

তখন পরিবারের আবেদনে খালেদা জিয়াকে দেশেই চিকিৎসা নেওয়ার শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

এখন এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক দিন আগে বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে তা আদালতের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “দেখুন, এখানে অনেক কিছু জড়িত আছে। বিদেশে যেতে হলে আবার কোর্টের কোনো (কিছু) লাগবে কি না? সেটাও তো ব্যাপার আছে। সেজন্যই আইনমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তার কমেন্টস আসুক।”

বৃহস্পতিবারের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজনের বিষয়টি তার ভাইয়ের কাছেই জেনেছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

“আমাদের দেশে চিকিৎসকরা এ ধরনের অভিমত দিচ্ছেন। আমরা যদিও চিকিৎসক থেকে শুনিনি; এটা তার (শামীম ইস্কান্দার) আবেদনে দেখেছি।”

এভার কেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারকি করছে। তারাই উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুপারিশ করেছে বলে বিএনপি নেতারা জানান।

কারাগারে যাওয়ার পর সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসায় বরাবরই খালেদা জিয়া আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে বরাবরই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছিল। সাময়িক মুক্তির পর বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিল দলটি।