তিনি বলেছেন, এজন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে আদালতের নির্দেশনা নিয়ে আসতে হবে। আর এই বিষয়ে খালেদা জিয়ার কোনো আবেদন সরকার পায়নি।
এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি না, তা সরকার ঠিক করবে।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক আরও জটিলতা রয়েছে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদাকে কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দিয়েছিল। ওই শর্তে তার দেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়টি রয়েছে।
এবার হাসপাতালে ভর্তির পর তাকে বিদেশ নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
মঙ্গলবার ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারে ত্রাণ বিতরণের এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালকে পেয়ে সে বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পরিবারের কেউ আবেদন করেছেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়ার তরফ থেকে কিংবা তার পরিবারের থেকে কোনো আবেদন, কোনো ধরনের নিবেদন আমাদের কাছে আসেনি।”
আবেদন করলে সরকার কী করবে- তার উত্তরে তিনি বলেন, “সাজা স্থগিত করে বাসায় চিকিৎসা নেওয়ার সুবিধা প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন। এখন এর চেয়ে বেশি পেতে হলে আদালতের মাধ্যমে আসতে হবে।”
আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “আজকে আমরা যতটুকু জানি, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার ইচ্ছানুযায়ী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
“তিনি (খালেদা জিয়া) যাতে উন্নত চিকিৎসা পান সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী দেশে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার সুবিধা করে দিয়েছেন।”
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে হলে আদালতের অনুমতি লাগবে কি না- মঙ্গলবার সাংবাদিকরা এই প্রশ্ন করেছিল অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিনকে।
উত্তরে তিনি বলেন, “ওনার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা কতটুকু প্রয়োজন। এইখানে বাংলাদেশে কী আছে না আছে, সব কিছু দেখে সরকার বিবেচনা করবে।
“সরকার যদি প্রয়োজন মনে করে, আইন অনুযায়ী যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সরকার আদালতে আসবে। কারণ এটা (দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিতের আদেশ) সরকারি আদেশ। পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারই নির্ধারণ করবে। কিন্তু সরকার এটা ঠিক করবেন এটার (বিদেশ নিয়ে চিকিৎসার) প্রয়োজন আছে কিনা।”
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা আরও বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ এর উপধারা ১ অনুযায়ী দণ্ড স্থগিত করে সরকার তাকে মুক্তি দিয়েছে। এখন এটা (বিদেশ নিতে) করতে গেলে আমার মনে হচ্ছে, আদালতে আসতে হবে। তারপরও আমি না দেখে বলতে পারছি না।”
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যেতে হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। গত বছরের ২৫ মার্চ মুক্তির পর থেকে গুলশানের বাসাতেই ছিলেন তিনি।
গত ১১ এপ্রিল তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পরে। ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাসায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
২৭ এপ্রিল রাতে পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরায় এভার কেয়ার হাসপাতালে গেলে সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে সোমবার তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়।