টিকা নীতিতে ‘অপরিণামদর্শিতা’ দেখছেন মেনন

সরকারের ‘অপরিণামদর্শী’ নীতির কারণে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2021, 11:11 AM
Updated : 29 April 2021, 11:11 AM

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দলীয় এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক এ দলটির প্রধান।

মেনন বলেন, “করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন নিয়ে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে তা সরকারের অপরিণামদর্শী নীতিরই ফলাফল। একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে গিয়ে সরকার এক ঝুড়িতে সব ডিম রেখেছিল।”

টিকা কূটনীতিতে ‘সরকারের পা ফসকেছে’ মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ভারতে তীব্র সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, নিজ দেশের প্রয়োজন না মিটিয়ে তারা অন্য কাউকে ভ্যাকসিন দেবে না, সেটাই স্বাভাবিক।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সরকার ভালোভাবে যাত্রা শুরু করলেও টিকা সঙ্কটে এখন ‘মাঝপথে তরী ডোবার উপক্রম’ হয়েছে মন্তব্য করে মেনন বলেন, “সরকার এখন চারিদিকে পথ খুঁজছে।”

মহামারী মোকাবেলায় সরকার দেশের ১৩ কোটিরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে গত নভেম্বরে সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজ টিকা আনতে চুক্তি করে সরকার।

মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা ছিল চুক্তিতে। তবে জানুয়ারির প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ এবং ফেব্রুয়ারিতে ২০ লাখ মিলিয়ে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারত সরকারের উপহার হিসেবে এসেছে ৩২ লাখ ডোজ টিকা।

ভারতে করোনাভাইরাস মহামারী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দেশটি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ফলে বাংলাদেশের কেনা বাকি ২ কোটি ৩০ লাখ ডোজ টিকা কবে আসবে, তা এখনও নিশ্চিত না।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে সরকার। ৮ এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান। কিন্তু ভারত থেকে টিকা আসা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া এখন সাময়িকভাবে বন্ধ।

এই পরিস্থিতিতে সরকার অন্য উৎস থেকে টিকা পাওয়ার চেষ্টায় জোর দিয়েছে। এরই মধ্যে রাশিয়ার ‘স্পুৎনিক-ভি’ এবং চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মেনন বলেন, “অক্সিজেনের ক্ষেত্রেও মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান ও ভারতের উপর নির্ভরতা একই সঙ্কট তৈরি করছে। আর কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও গত এক বছরে আইসিইউ, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা কিছুই করা হয়নি।

“চলতি বছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে দশ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছিল। এর কতটা ব্যবহার হয়েছে, আর কতটা নয়-ছয় হয়েছে তা তদন্তের দাবি রাখে।”

ওয়ার্কার্স পার্টি ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত ওই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি আবুল হোসাইন। অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায়, যুবনেতা মো. তৌহিদ, পোশাক শ্রমিকনেতা রফিকুল ইসলাম সুজন, গৃহশ্রমিক নেতা মমতাজ বেগম বক্তব্য দেন।