খালেদার অবস্থা ‘স্থিতিশীল’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2021, 06:38 PM
Updated : 17 April 2021, 06:38 PM

শনিবার রাতে গুলশানের বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী একথা জানান।

সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, “উনার অবস্থা সব কিছু মিলিয়ে স্ট্যাবল আছে, স্থিতিশীল আছে বলে মনে হচ্ছে সব দিক দিয়ে।”

কোনো উন্নতি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ডা. সিদ্দিকী বলেন, “ধরেন আমি যে ম্যাডামের সন্ধ্যায় একটু জ্বর আসার কথা বললাম, সেটা যদি আমরা আগের দিনের সাথে তুলনা করি আজকে সারা দিন জ্বর আসেনি, সন্ধ্যার পরে এসেছে। তো ভাইরাস জ্বর আসতেই পারে।

“সেই হিসেবে একটা দিকে মনে হচ্ছে যে ইম্প্রুভমেন্ট আছে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে এই সময়গুলোকে শুধু একটা প্যারামিটারের ইম্প্রুভমেন্ট দিয়েই কিন্তু সব কিছু মূল্যায়ন করা যাবে না।”

তিনি বলেন, “আজকে সারাদিন জ্বর আসেনি, সন্ধ্যার পর কিছুটা জ্বর এসছে-সেটা ১০০.২। আমরা যে নতুন এন্টি ভাইরাল ঔষধটা শুরু করেছি সেটা আজকে তৃতীয় দিন হবে। অলরেডি উনি দু্টো ডোজ পেয়েছেন। মনে হচ্ছে যে, সেটার রেনপন্স ভালো, পজেটিভ রেসেপন্স পাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে।”

চিকিৎসক দলের প্রধান বলেন, “আমরা উনার পালস, ব্লাড প্রেসার, রেসপিরেশন এগুলো চেক করেছি, ভালো আছে। স্যাচুরেশনটা সবসময়ই উনার ৯৭/৯৮।

“মনে রাখতে হবে যে, আজকে হলো উনার নাইন ডে। আমরা সেকেন্ড উইকের জটিল সময়টা পার করছি। এর মধ্যে যাতে কখনো কোনো রকমের যদি জটিলতার লক্ষণ বা কোনো বিপদ সংকেত পাই, সেটা তাৎক্ষণিক সেই অবস্থায় আমরা ব্যবস্থা নেব।”

 খালেদা জিয়ার মানসিক অবস্থা জানতে চাইলে এফএম সিদ্দিকী বলেন, “মানসিকভাবে উনি খুবই স্ট্রং। উনি একটু আগেও আমাকে বলছিলেন, অনেক দেখে হয়ত টেলিভিশনে দেখে যে, বড় যারা সিনিয়র নেতা-কর্মী উনারা মাস্ক পড়ে না, মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে উনারা কথা বলেন। এটা কেমন কথা। একটু আগেই উনি বলছিলেন। মাস্ক যদি পড়তে হয় সবার প্রপার পরা উচিত।”

রাতে সাড়ে ৯টার পর চিকিৎসক টিমের সদস্যরা ‘ফিরোজায়’ প্রবেশ করেন। বেরিয়ে আসেন রাত সাড়ে  ১০টায়।

এফএম সিদ্দিকীর সাথে আরো ছিলেন অধ্যাপক আব্দুস শাকুর খান, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।

বৃহস্পতিবার রাতে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান (চেস্ট) করা হয়। গুলশানের বাসা থেকে তাকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ নিরাপত্তায় এভারকেয়ারে নিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আবার গুলশানের বাসায় ফিরিয়ে আনা হয়।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ার পর প্রখ্যাত ‘বক্ষব্যাথি ও মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকীরে নেতৃত্বে ব্যক্তিগত চিকিতসক টিম গুলশানের বাসায় তার চিকিতসা শুরু হয়।

‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরো ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসাও এখানে চলছে।

৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়; শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিতসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ সীমিত।