আওয়ামী লীগের মুজিব নগর দিবস পালন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2021, 11:20 AM
Updated : 17 April 2021, 11:20 AM

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারা দেশের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। 

পরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় প্রত্যেক সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ১০-১২ জন নেতাদের নিয়ে সীমিত পরিসরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, "আজকের এই দিনে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন করা হয়, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।

“আজকে আমাদের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী পালন করছি, আজকে মুজিব নগর সরকারেরও ৫০ বছর পূর্তি। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখে আজকে এই দিনটি উৎসবমূখর পরিবেশে পালন করতে পারছি না।"

করোনাভাইরাসের সঙ্কট মোকাবিলার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দমনই আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, "আজকে আমাদের সামনে দুটি চ্যালেঞ্জ, একটি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করা, পরাজিত করা।

“আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করা পরাজিত করা। এই দুটি চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।"

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহাকুমার বৈদ্যনাথতলার আম বাগানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে।

এরপর থেকে বৈদ্যনাথতলা মুজিবনগর হিসাবে পরিচিত। আর দিনটি পালন করা হয় মুজিবনগর দিবস হিসেবে।

স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। নয় মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

২৫ মার্চ কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার পর শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

এরপর ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয় সেই ঘোষণাপত্রে।

ঘোষণাপত্রে দেশের সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।

তাজউদ্দিন আহমেদ সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ জাতির উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে প্রচার করা হয়। দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারে, বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে।

এরপর ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে শপথগ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরদিন এ খবর দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকা এবং সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়।