৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব: অপেক্ষা আরও ‘এক দশক’

এক যুগেও রাজনৈতিক দলগুলো সব স্তরের কমিটিতে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় আরও সময় দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2021, 06:03 PM
Updated : 7 March 2021, 06:03 PM

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সুপারিশ অনুযায়ী শর্তপূরণে আরও ১০ বছর সময় দিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাবনা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

ভেটিং শেষে তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদন ও সংসদে উপস্থাপনের পর সংশোধিত আইন জাতীয় সংসদে তোলা হবে।

২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি। আরপিওর ৯০ খ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটির সব দলের সব স্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ২০২০ সাল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

এখন ইসিতে ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। কিন্তু ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের শর্ত কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।

গণফ্রন্ট ও সাংস্কুতিক মুক্তিজোট নামে তালিকার ছোট দুটি সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখার দাবি করলেও তা যাচাই করেনি নির্বাচন কমিশন।

এ বাস্তবতায় আইন সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আরও সময় দেওয়ারও প্রস্তাব আসে।

প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি যেমন আলোচনায় জোর পায়, তেমনি প্রাসঙ্গিকভাবে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “বিদ্যমান আইন সংশোধন করে আরও ১০ বছর সময় দেওয়ার প্রস্তাবনা রয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

“সব কিছু পর্যালোচনা করে পুরো প্রক্রিয়া শেষে কত সময় পাবে দলগুলো তা আইন সংশোধন হলেই চূড়ান্ত হবে।”

৩৩% নারী প্রতিনিধিত্বের শর্ত পূরণে অধিকাংশ দলের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আর হক মিনু।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, শর্তটাই তো রাজনৈতিক দলগুলোকে পূরণ করতে হবে। আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া তো শেষ হয়নি; সময় বাড়ানো হয়নি এখনও। কাজেই দলগুলো তো অনেক সময় পেয়েছে।

“রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে ১০ বছর পরে আবার বলবে সময় দাও। আমি মনে করি, অনেক বেশি সময় দেওয়ার দরকার নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর শর্ত পূরণের সদিচ্ছা থাকতে হবে।”

একগুচ্ছ প্রস্তাব পর্যালোচনায়

গেল বছর আইন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মতামত নিয়েছে ইসি। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অধিকাংশ দল, সংগঠন ও নানা ব্যক্তির মতামত পেয়েছিল।

তা পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় এবং তা ভেটিং পর্যায়ে রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার যুগ্মসচিব মো. মাহবুবার রহমান সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দল নিবন্ধন সংক্রান্ত মতামতসহ বেশ কিছু প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এগুলো মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উইং খসড়া নিয়ে কাজ করছে। এখনও ভেটিং পর্যায়ে রয়েছে।”

এই সংক্রান্ত খবর