ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ভয় দেখানোর অস্ত্র: কামাল

সরকার জনগণকে ভয় দেখাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে অভিযোগ করে আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2021, 12:32 PM
Updated : 6 March 2021, 04:04 PM

বিতর্কিত এই আইনে কারাবন্দি মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে আইনটি বাতিলে অনেকে সরব হওয়ার প্রেক্ষাপটে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তিনি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনটি সংস্কারের কথা ক্ষমতাসীনদের কেউ কেউ বলছেন, সে বিষয়টি তুলে ধরে হলে প্রবীণ আইনজীবী কামাল বলেন, “সংশোধন নয়, আমরা আইনটি বাদ দেওয়ার পক্ষে।

“ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এভাবে হলে বাক স্বাধীনতা, চিন্তা করা স্বাধীনতাকে যেভাবে আঘাত দেওয়া হচ্ছে সেখান থেকে আমাদের পুরোপুরি সমাজকে মুক্ত করা দরকার।”

লিখিত বক্তব্যে কামাল বলেন, “আজ যারা নিজেদের নির্বাচিত দাবি করে দেশ শাসন করছে তাদের প্রতি জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও সমর্থন নেই। জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার জনগণকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার অপকৌশল হিসেবে বিভিন্ন কালাকানুন জারি করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তারই অংশ।”

স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে কামাল বলেন, “আজ গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিবর্তে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের স্বর্গরাজ্য গড়ে উঠেছে।

“জনগণের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে। সামনে অগ্রসর হওয়া ছাড়া জনগণের আর কোনো বিকল্প নাই। এই রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও অর্থনৈতিক লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির জন্য ‘দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গঠিত অশুভ সিন্ডিকেট’কে দায়ী করেন কামাল।

তিনি জানান, গণফোরাম জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে আগামী রোজার মাসে সারাদেশে গণসংযোগ শুরু করবে।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়ার পদত্যাগের পর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে কে- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কামাল বলেন, “এখন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকউল্লাহ। উনি খুব পরিচিত লোক।”

গণফোরামের যে একটি অংশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পৃথক কর্মসূচি পালন করছে, তারা গণফোরামের অংশ কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “গণফোরাম থেকে কিছু লোক বেরিয়েছে, বেরিয়ে গিয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন। তারা বেরুতেই পারেন। বাধ্য করে কাউকে তো রাখা যায় না। ওদেরকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন আপনারা কেন বেরিয়ে গেছেন?”

কামাল হোসেন যখন জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভেতরে সংবাদ সম্মেলন করছিলেন তখন প্রেস ক্লাবের বাইরে যুব গণফোরামের ও ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজের ব্যানারে মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, আবু সাইয়িদদের নেতৃত্বে একটি অংশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যু এবং কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে।

কামাল বলেন, “আমরা যারা গণফোরাম করে যাচ্ছি, আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাচ্ছি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার, যাতে তারা বাধ্য হয় যেসব অনুচিৎ কাজ করছে সেটা থেকে সরে দাঁড়াতে।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে প্রায় এক বছর পর বাসার বাইরে এসে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করলেন কামাল। এতে তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।

সংবাদ সম্মেলনে আওম শফিকউল্লাহ, মোশতাক আহমেদ, জানে আলম, সুরাইয়া বেগম ও সেলিম আকবার উপস্থিত ছিলেন।