ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশি ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা: ফখরুল

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই আইনের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2021, 08:52 AM
Updated : 4 March 2021, 09:04 AM

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বৃহস্পতিবার এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি বলেন, এই আইনে গত পাঁচ বছরে গৃহবধূসহ প্রায় সাতশ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কারাগারে বন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু ও নোয়াখালীর বশিরহাটে ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে স্থানীয় সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কির হত্যার বিচারের দাবিতে জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, “লেখক মুশতাক আহমেদকে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে গ্রেপ্তার করে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রেখে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রথমেই বলেছিলাম যে, এই হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রীয়ভাবে হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছি।”

তিনি বলেন, “এই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে প্রায় সাতশ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, ইতিপূর্বেও শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা বা কার্টুন বা লেখার কারণে পাঁচ বছরে গৃহবধু থেকে শুরু করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী আমাদের সাংবাদিকরা।

“এই সরকার সম্পূর্ণ একটা অবৈধ সরকার, অনির্বাচিত সরকার। তাদেরকে জোর করেই ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে এবং টিকে থাকার জন্য এই ধরনের সম্পূর্ণ গণবিরোধী আইন তৈরি করেছে। সেই আইনের মাধ্যমে, এই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে তারা জনগণের কথা বলার অধিকার, বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে।”

এই আইনে গ্রেপ্তার সবার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “আজকে রাস্তায় রাস্তায় আমাদের নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হয়েছে। আমার চোখের সামনে আমি দেখেছি কিভাবে নেতাকর্মীদেরকে পুলিশ বাধা দিচ্ছে। আমি পুলিশের কাছে গেলাম, পরিচয় দিলাম….। আমরা দুঃখ লাগে দেশ থেকে আদব-কায়দা সব উঠে গেছে নাকি?

“এই সরকার কাউকে সন্মান দিতে জানে না, এই সরকার কোনো সন্মান পেতে পারে না। এই সরকার ভোটের সরকার নয়, এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। সুতরাং এই সরকারকে আমরাও মানি না।”

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসানের পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু, সহসভাপতি আবদুল খালেক হাওলাদার, মোনায়েম মুন্না, কেন্দ্রীয় নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, রফিকুল আলম মজনু, নুরুল ইসলাম নয়ন, গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ব্যাপক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশের সাঁজোয়া যান, রায়ট কার, জলকামানের গাড়িও ছিল প্রেস ক্লাবের পূর্ব দিকের সড়কে।

সকাল ১০টায় সমাবেশ শুরু হয়ে ১১টা ৪০ মিনিটে দিকে শেষ হলে দ্রুত নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন। আমানউল্লাহ আমান ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি নেতাকর্মীদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন।