রোববার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, “যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে আজকে তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।তাদের রক্তস্রোতের মধ্য দিয়েই স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন, ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আজকে দেশ যখন স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে, একদল আছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। সেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এখনও বিষবাষ্প ছড়ায়।এখনও আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির বিরুদ্ধে তারা কথা বলে এবং তারা আস্ফালন করে।”
“স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও তাদেরকে আমাদের দেশ থেকে নির্মূল করতে না পারা, এটা আমাদের দুর্বলতা। আজকে এই মহান শহীদ দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, অপশক্তি। যারা ভাষা, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে আস্ফালন করে, তাদেরকে নির্মূল করা।”
ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “একুশে ফেব্রুয়ারির পথ ধরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।অনেকে হয়তো জানে না, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই যখন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার আলোচনা চলছিল, তখন তৎকালীন তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার করার দাবি উপস্থাপন করেছিলেন।
সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন এবং জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, “সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের জন্য আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা জানেন উচ্চ আদালতের ভাষা ইংরেজি ছিল, এখন উচ্চ আদালতের রায় বাংলায় করা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় জাতিসংঘ একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলা পৃথিবীর ষষ্ঠ ভাষা। আজকে এই দিনে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলা ভাষা যেন জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই লক্ষ নিয়ে আমাদের সরকার কাজ করছে।”
দেশে বিরোধীদল কথা বলতে পারছে না, বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেই এমন অভিযোগ করেছে। কথা বলার স্বাধীনতা আছে বলেই তারা এটা বলতে পেরেছে।এতেই প্রমাণিত হয়, আসলে যত কথা দরকার, তার চেয়ে বেশিই প্রতিদিন কথা বলেন।”
শহীদ মিনারে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না, এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও তা মানছেন না।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করেছি।আমাদের সবাই মাস্ক পরে এসেছে। গতকাল রাতে ১২টার পর আমরা দলের পক্ষ থেকে পাঁচজনই শ্রদ্ধা জানিয়েছি। চেষ্টা করেছি, চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই, তবে সব সময় এতবড় সমাবেশে, সবার পক্ষে এটি মানা কঠিন।”
এর আগে সকালে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে প্রভাতফেরি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।
এসময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মতিন খসরু, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান।