জিয়ার খেতাবে হাত দিলে পুড়ে ছাই হবে: গয়েশ্বর

জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত দিলে সেই হাত ‘পুড়ে ছাই হয়ে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2021, 11:47 AM
Updated : 15 Feb 2021, 03:20 PM

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার এক সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর একথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত দিলে সেই হাতে ফোসকা ফুটবে, আগুনে পোড়ার মতো ছাই হয়ে যাবে।

“এরা যে কত বড় একটা মহা কলঙ্কের তিলক নিজেদের কপালে আঁকার চেষ্টা করছে, এখনও বুঝছে না। কবি-সাহিত্যিক-গীতিকাররা সব পক্ষ যে গানের লাইনটি বলেন, মানি না, মানি না, কলঙ্ক আমার ভালো লাগে…অর্থাৎ কিছু কিছু লোকের কলঙ্কের তিলক পরতে ভালো লাগে...”

গয়েশ্বর বলেন, “এই দেশটা প্রজাতন্ত্রের, সেই প্রজাতন্ত্রের নাম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মালিক জনগণ। সেই জনগণের মালিকানা ফেরত আনার জন্যই আমাদের আগামী দিন পথ চলতে হবে।

“তাতে বাধা আসবে, বাধা অতিক্রম করতে হবে। লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। সেই গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, জিয়ার বাংলাদেশ জনগণের সামনে হাজির করতে হবে। এটাই হবে আমাদের জন্য বেস্ট রিভেঞ্জ। আমাদের অন্য কোনো প্রতিশোধ নাই। ইনস্টিড অব ডেমোক্রেসি ইজ দা বেস্ট রিভেঞ্জ ফর দা বিএনপি ফর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান অ্যান্ড অল অব দা পিপলস এ্যাজওয়েল এ্যাজ। আমরা সেই প্রতিশোধের নেশায় মেতে উঠি, গণতন্ত্রকে ফেরত আনি।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে তাদেরকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে ‘নিরপেক্ষ’ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রতিবেশী দেশের ‘তল্পিবাহক সরকার’ আখ্যায়িত করে গয়েশ্বর বলেন, “আজকে যা কিছুই হচ্ছে সে বিষয়ে ভারতের একটি অংশ বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে না পেলেও মনের দিক থেকে তারা এই দেশটাকে শোষণ করছে।”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে, কর্মসূচির কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। আমাদেরকে জায়গা দেবেন না। এই বিস্তৃত বাংলাদেশে একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানিরা জায়গা দেয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা লুঙ্গি পরে স্টেনগান নিয়ে ধান খেত, গম খেত, খালে-বিলে থেকে ওদেরকে প্রতিহত করেছে।

“আপনারা প্রেস ক্লাবের সামনে হামলা করবেন, আপনারা পার্টি অফিসের সামনে হামলা করবেন, আপনারা রাজশাহীতে হামলা করবেন, আপনারা চট্টগ্রামে হামলা করবেন। আমাদেরও ধান ক্ষেত আছে, আমাদেরও খাল-বিল-নদীনালা আছে। প্রত্যেকটি জায়গা আমাদের দুর্গ, সেই সব দুর্গ থেকে আপনাদেরকে মোকাবিলা করা হবে।”

রিজভী বলেন, “এই যে কম্পিটিশন লেগে গেছে আ ক ম মোজাম্মেলন হক, শাহজাহান খান। তখন নৌ প্রতিমন্ত্রী গতকাল বলে বসলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের লোকই ছিলেন না। আমি বললাম যে, এতগুলো খেকশিয়াল, পাতি শিয়াল…এর মধ্যে আমি আরেকটা পেলাম বাকশিয়াল। এই বাকশিয়াল হচ্ছে এই সমস্ত নৌ প্রতিমন্ত্রী-টন্ত্রী, কতগুলো চামচা-টামচা আছে তারা।”

যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “আওয়ামী লীগে লাইট জ্বালিয়ে তো একটা বীরপ্রতীক পাওয়া যাবে না। বীরউত্তম তো অনেক পরের ব্যাপার। রণাঙ্গনে এসব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাই বলেই জিয়াউর রহমানকে খাটো করছে। কোনো লাভ হবে না। জনগণ আপনাদের চিনে, আপনাদের চরিত্র সম্পর্কে জানে।”

যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, “চাঁদেরও কলঙ্ক আছে কবি-সাহিত্যিকরা বলেন। কোনো কলঙ্ক যেমন সূর্যকে স্পর্শ করতে পারে না তেমনি শহীদ জিয়াকে ছোট করার কোনো চেষ্টাই কোনো দিন বাংলাদেশে সফল হবে না, ইনশাল্লাহ।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা জেলা কমিটির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানরে ‘বীরউত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

বিএনপির ঢাকা জেলার সভাপতি দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, তমিজউদ্দিন আহমেদ, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, যুব দলের গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।