দিশেহারা হয়ে লাঠির ভাষায় জবাব দিয়েছে সরকার: রিজভী

বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিপেটার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তাদের সমাবেশে ‘মানুষের ঢল’ দেখে সরকার ‘দিশেহারা হয়ে’ লাঠির ভাষায় জবাব দিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2021, 01:14 PM
Updated : 13 Feb 2021, 01:17 PM

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলটির সমাবেশে লাঠিপেটা করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

এ ঘটনায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আহত এবং ২৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন রিজভী।

বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বিএনপির সভা-সমাবেশে মানুষের ঢল দেখে সরকার দিশেহারা। তাই তারা লাঠির ভাষায় জবাব দিয়েছে।”

সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির সমাবেশে লাঠিপেটা করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

পুলিশের লাঠিপেটায় আহত এবং গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের নামের তালিকা পড়ে শোনান রুহুল কবির রিজভী।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিমউদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, ভিপি মো. হানিফ, মহানগর বিএনপির মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, আবদুল হালিম নকী, সাকিল আহমেদ স্বপন, স্বপন, ইমন, সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সরদার নুরুজ্জামান, মোরশেদ আলম, যুব দলের আনিসুর রহমান মাস্টার, কৃষক দলের সফিকুল ইসলাম, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুর করীম মজুমদার, জাসাসের শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, জাকির হোসেন রোকন, রফিকুল ইসলাম স্বপন, ইব্রাহিম, ছাত্রদলের খন্দকার এনামুল হক এনাম, সাজ্জাদ হোসেন রুবল, মিনহাজুল হক নয়ন, নোমান খান, জুয়েল, হান্নান, সাদ্দাম হোসেন, মেহেদি হাসান, শরীফুল ইসলাম, আরিফ হোসেন অভি, আল আমিন, শরীফ, মোতাব্বির হোসেন অপুম মঞ্জু, মনিরা আখতার রিক্তা, সেলিনা সুলতানা নিশিতা, নাসিমা আখতার কেয়া, রিফাত, আতিয়ার রহমান, দিলু, মো. হাসান, মো. লিটন, সোহাগ, আজহার, আনোয়ার হোসেন, মো. ইউসুফ, সজিব ও শরিফ।

রিজভী জানান, কর্মসূচি থেকে যুব দলের জাকির সিদ্দিকী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সারোয়ার ভুঁইয়া রুবেল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওবায়দুল্লাহ নাঈম, জাকির হোসেন নাঈম, ঢাকা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের জহির মাঝি, আনোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এবায়দুর ব্যাপারী, নাদিম হোসেন, হিরণ, মো. আজিজ, রুবেল, ইরান, সুমন, রাহাত, সজীব, আল-আমীন, জয়, রফিকসহ ২৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিপেটার প্রতিবাদে শনিবার বিকালে নয়া পল্টনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সরকারের সমালোচনা করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “দেশে এখন বর্তমান অবৈধ সরকারের আদিম হিংস্রতা শুরু হয়েছে। আজকের ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হল, আওয়ামী গুণ্ডাশাহীর রাজত্ব কত ভয়ঙ্কর। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর পুলিশের এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। পুলিশ বিনা কারণে উসকানি ও মারমুখী আচরণ করে। তাদের আচরণ ছিল উদ্ধত, বেপরোয়া ও সন্ত্রাসী ক্যাডারদের মতো।”

তিনি বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই সরকারের ভাবমূর্তি এমন তলানিতে ঠেকেছে যে, জনগণের মনোযোগ ভিন্ন দিকে সরাতেই সরকার সিরিজ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিএনপির সমাবেশের ওপর সরকার পুলিশকে যে লেলিয়ে দিয়েছে সেটির এক অমানবিক নিষ্ঠুর দৃশ্য দেশবাসী আবারও অবলোকন করল।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের নির্বাহী সদস্য খান রবিউল ইসলাম রবি ও কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন উপস্থিত ছিলেন।