নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রশক্তির গুণ্ডামি যে চরিত্র সেই চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে যেসব জায়গায় আগামী পরশু পৌর নির্বাচনে ভোট হবে। গুণ্ডামির চরিত্রই হচ্ছে কেড়ে নেওয়া, মারধর করা, উৎপীড়ন করা, ভাঙচুর করা, জখম করা, রক্তাক্ত করা। সেই একই ধারাবাহিকতা চলছে।
“রাষ্ট্রশক্তির এই গুণ্ডামির চরিত্র আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে এই পর্বের পৌর নির্বাচনের প্রাক্কালে। সরকারি দল সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যেমন গুণ্ডামি করছে পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশও বিনা কারণে মামলা দিচ্ছে এবং পাইকারি হারে গ্রেপ্তার করছে।”
ঠাকুরগাঁও, ময়মনসিংহের ফুলপুর, নরসিংদী, সাতক্ষীরা, যশোরসহ বিভিন্ন পৌরসভায় বিএনপি দলীয় প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা, নেতাকর্মীদের অবরোধ করে রাখা, ভোটারদের ভয় প্রদর্শন, বিরোধী প্রার্থীদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, পরিকল্পিতভাবে বানোয়াট ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে হয়রানি, গ্রেপ্তারের নানা ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী।
তিনি বলেন, “নির্বাচনে ধানের শীষের নিশ্চিত বিজয় ঠেকাতে সরকারি দল এই ধরনের অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লাগামহীন সন্ত্রাসী দৌরাত্ম ও নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রশাসনের নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বের ঘটনায় আমি বিএনপির পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং ঠাকুগাঁওসহ আসন্ন পৌর নির্বাচনকে ভয়ভীতিমুক্ত করতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের জোর আহবান জানাচ্ছি।”
ফুলপুর পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আমিনুল হকের নির্বাচনী প্রচারণা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল বাশার আকন্দের বাসভবনে হামলা এবং দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ময়মনসিংহ উত্তর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দলীয় প্রার্থীসহ স্থানীয় নেতাদের দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার নিন্দা জানান রিজভী।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের প্রধান সরকার প্রধানের পদলেহন করতেই সবচাইতে বেশি আনন্দিত হন, খুশি হন। এই কমিশনের প্রতিটি জেলায় অফিস আছে। তাদের মাধ্যমে অভিযোগগুলো কমিশনে করা হয়েছে। কিন্তু এই নির্বাচন কমিশন তো সুষ্ঠু ভোটের নির্বাচন করতে দায়িত্ব নেয়নি। তারা দায়িত্ব নিয়েছে শেখ হাসিনাকে খুশি করার, সরকারকে খুশি করার, যেটা তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করছে।
“সুষ্ঠু ভোট এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যাবে- এটা ভুলিয়ে দিতে চাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা সাহেব। তার মধ্যে নির্লজ্জতা এমনভাবে পেয়ে বসেছে যেন একেবারেই দুই কর্ণবিহীন একজন ব্যক্তি, লজ্জা-শরম বলে কিছু নেই। যে নিজের স্বাধীনতাকে অন্যকে হরণ করতে দেয় তার মতো বিশ্বাসঘাতক কী আর দুইটা হতে পারে?”
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মামুন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের জাহিদুল কবীর, মহানগর দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।