আন্দোলনে ‘সরকার পতনের’ হুঁশিয়ারি মির্জা আব্বাসের

দেশের জনগণকে ‘ঐক্যবদ্ধ করে’ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের ‘পতন ঘটানোর’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2021, 12:39 PM
Updated : 11 Feb 2021, 12:39 PM

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, “আপনারা (সরকার) তারেক রহমানসহ নেতা-কর্মীদের সাজা দিচ্ছেন। … জিয়াউর রহমানের খেতাব ছিনতাই করতে চাচ্ছেন। এসব করে কোনো লাভ হবে না।

“দেশের জনগণ ফুঁসে উঠছে, ফুঁসে উঠেছে। ইনশাল্লাহ এই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে, এই জনগণের আন্দোলনে একদিন সকল স্বৈরাচারী শাসকের সরকারের মত এই সরকারেরও পতন হবে।”

সংবিধান লঙ্ঘন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের কারণে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।

মির্জা আব্বাস বলেন, “জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার পদক আপনারা ছিনতাই করবেন। ছিনতাই করা আপনাদের অভ্যাস হতে পারেন। আমাদের কথা হলো- এটা একটা সুদূরপ্রসারি চক্রান্তের অংশ।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে এক মামলায় জিয়ার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে নড়াইলের এক আদালত।

এর আগে অর্থ পাচারের একটি মামলায় সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে তারেকের। সেসব দণ্ড মাথায় নিয়ে তিনি বিদেশে পালিয়ে আছেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, “তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আপানারা মামলা দিলেন, আবার দুইবছর সাজাও দিলেন। আরে ২ বছর দেন, আর ২০০ বছর দেন, কোনো লাভ হবে না। তারেক রহমান যখন দেশে ফিরে আসবেন সবার মাঝে, আপনাদের হাজার বছরের সাজা মানুষজন কেউ পাত্তা দেবে না।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “এই সরকারের বিরুদ্ধে এত কথা বলে লাভ নেই।… আর কোনো দাবি নাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই।”

জিয়ার খেতাব নিয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “একজন আজকে বলেছেন, খেতাব নিয়ে যাওয়াতে আইনগত কোনো বাধা নেই। আরে যে দেশে আইন নেই, সেই দেশে আইনগত বাধা কি থাকবে?”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত, আওয়ামী লীগ সরকার তখন ‘আল-জাজিরা ভাইরাসে আতঙ্কিত’।

“এই আল জাজিরা ভাইরাসকে কাউন্টার করার জন্য নতুন নাটক জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেওয়া এবং তারেক রহমানের সাজা দেওয়া।”

নড়াইলের আদালতে তারেক রহমান, সাতক্ষীরায় হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ১০ জন এবং পাবনার ৪৭ জন বিএনপি কর্মীর সাজা এবং বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের যৌথ উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সারাদেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়েও একই কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার ও উত্তরের এজিএম শামসুল হকের পরিচালনায় ঢাকার সমাবেশে বিএনপি নেতাদের মধ্যে আমানউল্লাহ আমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, নাজিম উদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, রাজীব আহসান, মহানগর বিএনপির মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, ইউনুস মৃধা, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এসএম জাহাঙ্গীর, রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ফখরুল ইসলাম রবিন, নজরুল ইসলাম, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন বক্তব্য দেন।