জাতিসংঘের মাধ্যমে তদন্ত চায় বিএনপি

বাংলাদেশকে নিয়ে আল জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদনে যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছে, জাতিসংঘের মাধ্যমে তার তদন্ত চেয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2021, 12:33 PM
Updated : 10 Feb 2021, 01:35 PM

বুধবার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দলের বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আল জাজিরার প্রতিবেদনে যা এসেছে, তা ‘লাগামহীন সাগরসম দুর্নীতির একটি টিপ অব দ্য আইসবার্গ’।

“৭টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘকে এই বিষয়ে তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে যে তদন্তের আহবান জানিয়েছে, এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার প্রতি বিএনপি পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করছে এবং জাতিসংঘকে তার নিজস্ব পদ্ধতিতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আশু তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছে।”

আল জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতা বলেন, “আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লিখিত অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই না করেই সরকার প্রতিবেদনটিকে ঢালাওভাবে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

“অথচ সঠিক তথ্যের প্রকাশই হচ্ছে ভুল তথ্যের জবাব। আর অপপ্রচার থেকে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের উপায়ও হচ্ছে আসল সত্য তুলে ধরা। কিন্তু সরকার প্রতিবেদনের মূল বিষয় বস্তু উহ্য রেখে খণ্ডিত তথ্য অথবা প্রান্তিক বিষয়ের উপর ভর করে ‘ষড়যন্ত্রের তত্ব’ প্রকাশ করে চলছে।”

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আল জাজিরার প্রতিবেদনে প্রচারিত অভিযোগসমূহে উল্লিখিত অনেক বিষয় নিঃসন্দেহে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। দেশে ও দেশের বাইরে একাধিক দেশে এই সব অপরাধ সংগঠিত হওয়ার সংবাদের কারণে উল্লিখিত অভিযোগসমূহ আন্তর্জাতিক ফৌজদারি অপরাধে রূপ লাভ করেছে।”

প্রতিবেদনের প্রতিবাদ থেকে জাতিসংঘ যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তাতে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অশংগ্রহণ বিঘ্নিত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “সেনাবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা বাহিনী জাতীয় ঐক্যের গর্বিত প্রতীক। প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রেখে তার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখা দলমত-নির্বিশেষে আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।

“আড়িপাতার সিগনাল সরঞ্জামাদি আমদানির ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নাম ব্যবহারের সরকারি ব্যাখ্যা জাতিসংঘ কর্তৃক বাতিল হওয়ার পর জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের বৃহত্তম অংশীদার হিসেবে ওই দায়িত্বে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতাই এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এরূপ আশঙ্কার মধ্যেই জাতীয় ঐক্যের প্রতীক আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী তথা আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলতে পারে তার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা, ভাবমূর্তি এবং প্রাসঙ্গিকতা।”

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের গর্ব। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জাতীয় সঙ্কটে অকাতরে কাজ করে যাওয়া দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা বাহিনী সর্বদা জনগণের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

“কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠির দুর্নীতি বা নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মের কারণে রাষ্ট্রের সংবেদনশীল এই মহান প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”