‘ব্যাখ্যা না পাওয়ায়’ নিন্দা জানাবে বিএনপি

আল জাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে ‘উদ্বেগ নিরসনে’ সরকারের তরফ থেকে ‘স্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য’ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি দাবি করে এর নিন্দা জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ওই ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতেই মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন নজরুল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “আল-জাজিরা টেলিভিশনে দেশ ও দেশের স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রচারিত রিপোর্ট সম্পর্কে জনমনে উত্থাপিত অনিবার্য উৎকণ্ঠা অবসানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা প্রকাশের যে দাবি বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তা এখনো না জানানোয় নিন্দা জানিয়ে শিগগিরই দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সংবাদ ব্রিফিং অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয় সভায়।”

রাষ্ট্রের একটি ‘গোয়েন্দা সংস্থা’ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ‘ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ’ করছে দাবি করে নজরুল বলেন, “স্থায়ী কমিটির সভায় এভাবে তথ্য সংগ্রহকে ব্যক্তি ও রাজনৈতিক মৌলিক অধিকার পরিপন্থি হিসেবে চিহ্নিত করে এ তৎপরতা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।”

নড়াইলের আদালতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাতক্ষীরার আদালতে দলের প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ১০ জন এবং পাবনার ৪৭ জন নেতা-কর্মীকে সাজা দেওয়াকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করেন নজরুল।

তিনি বলেন, তাদের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠানোরও নিন্দা জানানো হয়েছে স্থায়ী কমিটির সভায়। এসব ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ১১ জানুয়ারি দেশের সব মহানগর ও জেলা সদরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের ঘটনা নিয়েও বিএনপির স্থায়ী কমিটি নিন্দা জানিয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ অঘোষিত এক স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অধীনে থাকায় গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থার অসহনীয় যাতনার অভিজ্ঞতা থেকেই মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী জনগণের সাথে একাত্ত। সভায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করতে এখনো অক্ষম বাংলাদেশ সরকারকে এই ব্যাপারে আরো কৌশলী ও সক্রিয় হওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়েছে।”

অন্যদের মধ্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অংশ নেন। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেখান থেকেই এ ভার্চুয়াল বৈঠকে যুক্ত হন।