নিজের দলের এমপিদের নিয়ে সংসদে ফিরোজের ক্ষোভ

জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ সংসদে দাঁড়িয়ে নিজের দলের সংসদ সদস্যদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2021, 10:32 AM
Updated : 24 Jan 2021, 10:32 AM

রোববার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় ফিরোজ বলেন, “সব দলের সদস্যরা আছেন। জোট করে নির্বাচন করেছি। বিরোধী দলে বসেছি, এটা হল গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমাদের কারো কারো বক্তব্যে বোঝা যায় না কোন দলের সদস্য।

“কোনো কোনো সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নাম উচ্চারণ করে নাই, এরশাদের নাম উল্লেখ করে নাই। অথচ দল থেকে মনোনীত সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করেছি। কিন্তু নমিনেশন দিয়েছিল আমাদের দল। দলীয় ফোরামে এটা নিয়ে আলোচনা করব।”

সরকারের উন্নয়নের পিছনের জাতীয় পার্টির ‘ভূমিকা আছে’ দাবি করে ফিরোজ বলেন, “আওয়ামী লীগের কোনো নেতা একবারও জাতীয় পার্টির কথা বলে না। এত কার্পণ্য কেন? এটা গণতন্ত্রের ভাষা না। ২০১৪ সালে যে ধ্বংসযজ্ঞ ছিল, সে নির্বাচনে জাতীয় পার্টি না এলে নির্বাচন হত না। সরকার, সংবিধান, সংসদ কিছুই থাকত না। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে এসেছিল।”

আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনায় সরকারের সমালোচনা করে ফিরোজ রশীদ বলেন, দিন রাত প্রধানমন্ত্রী কাজ করছেন, অথচ টাকা ‘লুটপাট’ হয়ে যাচ্ছে।

“বিশেষ করে ব্যাংক খাত। লিজিং কোম্পানির হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে আত্মীয় স্বজনের অভাব হয় না। শালা-সম্বন্ধি সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে লোনের জন্য, পেয়েও যায়। টাকা যে চলে গেছে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে…

কাজী ফিরোজ রশীদ, ফাইল ছবি

“শুধু পিকে হালদারকে ধরলে হবে না। পেছনে কারা আছে? হাজার হাজার কোটি টাকা চলে গেল। বাংলাদেশ ব্যাংকের অসাধু কর্মকতরা জড়িত। তারা কেন খবর রাখেনি। সবকিছু অটোমেশন এখন। যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বন্ধেরও দাবি তোলেন এরশাদের গড়া জাতীয় পার্টির এই এমপি।

তিনি বলেন, “আমাদের কিছু সংগঠন আছে। একটি সংগঠন আছে নাস্তিক নির্মূল কমিটি। আরেকটি সংগঠন হচ্ছে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি। এই নির্মূল করার ক্ষমতা এদের কে দিয়েছে? আমি জানতে চাই। তুমি কে নির্মূল করার? আমার দেশে কোর্ট-কাচারি আছে না? অনেক বিচার করেছে এই সরকার। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হচ্ছে, রাজকারদের বিচার হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, তুমি কেন?... আমি মনে করি যে এদেরকেই প্রতিরোধ করার দরকার।”

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই সংসদ সদস্য বলেন, “অনুরোধ করব, এই সমস্ত সংগঠন-এইগুলো বন্ধ করুন। যাতে কেউ মানুষ নির্মূল করতে না পরে। কীসের নির্মূল কমিটি? আমাদের সমাজে একটা কোটারি আছে।”