উদ্দেশ্য আজ দেশকে নতজানু করে রাখা: ফখরুল

বাংলাদেশকে ‘নতজানু’ করে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2021, 04:57 PM
Updated : 21 Jan 2021, 04:57 PM

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বৃহস্পতিবার দলের এক ওয়েবিনারে বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তারা (সরকার) আজকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের যে পরিচিতি আছে, সেখান থেকে দূরে ঠেলে দিতে চাইছেন।

“আজকে একটা ষড়যন্ত্র চলছে, বাংলাদেশের যে স্বতন্ত্র, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, তা ভুলে গিয়ে সে অন্য জায়গায় নতজানু হয়ে থাকুক। এভাবে পরিকল্পনা চলছে।”

এই পরিস্থিতিতে বিএনপির পেছনে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।

তিনি বলেন, “আমাদের স্লোগান একটাই- আমরা আজকে মুক্ত হতে চাই এবং মানুষকে এই অবস্থা থেকে বাঁচাতে চাই শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই।”

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে গঠিত ‘সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম কমিটি’র উদ্যোগে আয়োজিত এই ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ড. মাহবুব উল্লাহ।

তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান যে গানটি ভালোবাসতেন- ‘প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ’, আমাদেরও শেষ ঠিকানা হচ্ছে বাংলাদেশ। যেটা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দলীয় সঙ্গীত আছে, তার মধ্য দিয়ে এটা ফুটে উঠে।”

ফখরুল বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ- এই দুইটাকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটি একটা দর্শন। এই দর্শনের উপর ভিত্তি করেই আমাদের জাতি সত্ত্বা দাঁড়াতে শুরু করেছে।

“আপনি দেখবেন আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ধারণার বিরোধিতা করে। কিন্তু আজকে যখন পাসপোর্ট তৈরি করেছে নতুন করে, সেই পাসপোর্টেও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ রাখতে বাধ্য হয়েছে।”

মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আসলে জিয়াউর রহমানকে আলাদা করে স্বাধীনতার কথা চিন্তাও করা যায় না। কারণ তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে গোটা জাতি অনুপ্রাণিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

“যারা আজকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভুলিয়ে দিতে চান, তার সম্পর্কে বিকৃত কথা, ইতিহাস বিকৃত করে জনগণের সামনে তুলে ধরতে চান, নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে শুধু একটি কথা বলতে চাই- যার যে অবদান সে অবদানটাকে স্বীকার করুন।”

ফখরুল বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধে মানুষের মূল আকাঙ্ক্ষাটা ছিল একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, একটা মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। দুর্ভাগ্য আমাদের, ৫০ বছর পরেও একটা সুষ্ঠু রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ করতে পারিনি। একটা চমৎকার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা পরিবর্তন হবে, সেই ব্যবস্থা করতে পারিনি।”

কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্ অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ইকতেদার আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া সকালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে সিলেট বিভাগ সমন্বয় কমিটির সভা হয় সিলেটে। সেখানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবনসহ কমিটির সদস্যরা ছিলেন।