নির্বাচন কমিশন আ. লীগের পোস্ট বক্স: রিজভী

নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের ‘নির্বাচনী পোস্ট বক্স’ হিসেবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2021, 10:03 AM
Updated : 18 Jan 2021, 11:07 AM

সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, গত পরশু দ্বিতীয় ধাপের ৬০টি পৌর সভায় আগের মতোই ব্যাপক সহিংসতা, রক্তপাত ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন করেছে ক্ষমতাসীনরা। সর্বত্র চর দখলের মতো কেন্দ্র দখল করে, ভোট কারসাজির ডিজিটাল মেশিন ইভিএম দিয়ে প্রকাশ্যে কারচুপি করা হয়েছে। দেশের জনগণ জানে, আওয়ামী লীগের আমলে জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে জনগণের ভোটে হারজিত নির্ধারিত হয় না, হারজিত নির্ধারিত হয় গণভবনে।

“নির্বাচন কমিশন স্রেফ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পোস্ট বক্স। তাদের কাজ আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড থেকে পাঠানো তালিকা প্রকাশ করা। এ খেলার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা, আর খেলোয়াড় হিসেবে আছে পুলিশ প্রশাসন। নির্লজ্জ রেফারি নির্বাচন কমিশন এখানে সরকারের হাতের পুতুল।”

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনের ব্যাপক আলোচিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছোট ভাই বসুরহাটে পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “পূর্ব নির্ধারিত এসব একতরফা নির্বাচনকে একটু রমরমা করতেই এবার ‘মডেল’ ছিলেন আব্দুল কাদের মির্জা। আওয়ামী লীগের এই নাটক মানুষ আগেই টের পেয়েছে। বসুরহাট পৌর নির্বাচন আওয়ামী লীগের ভণ্ডামির নতুন ‘মডেল’।

“কখনো নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে জনগণকে ব্যস্ত রাখা কিংবা কখনো আব্দুল কাদের মির্জার মতো ‘আইটেম বয়’ মার্কেটে ছেড়ে গণমাধ্যমকে ব্যস্ত রাখার এসব অপকৌশলের ব্যাপারে জনগন সচেতন। সেদিন বেশি দূরে নয়, মানুষকে নিয়ে, মানুষের স্বার্থ নিয়ে এসব রঙ-তামাশার জবাব জনগণ কড়ায়-গণ্ডায় ফিরিয়ে দেবে।”

পৌর নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে প্রচুর ভোটার উপস্থিতি ছিল, ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে- নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “কত বড় বেহায়া এবং সরকারের কাছে আত্মা বিক্রি করলে এমন নগদ মিথ্যা বলা যায়। এই কমিশন সরকারের ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে।

“বরাবরের মতোই শনিবারের পৌর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত নির্লজ্জ।”

সিরাজগঞ্জের শহীদগঞ্জে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম হত্যার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে যখন সিরাজগঞ্জ উত্তাল তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরাসরি খুনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, কাউন্সিলর হত্যা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র।

“শুধু অবৈধ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা কতটা নৃশংস হতে পারে এটা তার জজ্জল্য প্রমাণ। এদের মনে কোনো অনুশোচনা নেই। যতদিন আওয়ামী লীগ থাকবে ততদিন দেশের ফাঁড়া থাকবে না।”

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা শ্যামা ওবায়েদ, শিরিন সুলতানা, আবদুস সালাম আজাদ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।