‘মানহানিকর বক্তব্যে’ আইনি ব্যবস্থা নেবেন মেয়র তাপস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে বিষোদ্গার’ করছেন মন্তব্য করে বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘মানহানিকর বক্তব্যের’ জন্য তিনি আইনি ব্যবস্থা নেবেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2021, 08:44 AM
Updated : 11 Jan 2021, 08:44 AM

সোমবার দুপুরে ঢাকার মানিকনগরে বক্স কালভার্ট পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মেয়র তাপস।

সাবেক মেয়রের অভিযোগের সূত্র ধরে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “৯ তারিখ ঘটা করে সভা ডেকে আমার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করলেন তিনি। এটা ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।”

তাপস বলেন, গত ১৭ মে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছেন। সেই অভিযান এখনও চলছে।

“সেখান গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে মার্কেট সংক্রান্ত দুর্নীতির কিছু তথ্য বের হয়ে এসেছে। সেখানে যে টাকা লেনদেন হয়েছে, তা বের হয়ে এসেছে। যাদের সঙ্গে টাকা লেনদেন হয়েছে, যারা এর সঙ্গে জড়িত তারাই এখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।”

সাবেক মেয়রের দিকে ইংগিত করে বর্তমান মেয়র বলেন, “আমি কোনো অভিযোগ আনি নাই। এখানে যারা অবৈধভাবে দোকান দখল করেছে, টাকা লেনদেন করেছে… এখন তিনি পুরো দোষ আমার উপরে চাপাচ্ছেন। এটা অনভিপ্রেত এবং শুধু আক্রোশের বশবর্তী হয়ে।"

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে মেয়র তাপস বলেন, “আমি লক্ষ্য করেছি, তিনি মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। যেহেতু মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন, সুতরাং আইনি ব্যবস্থা নেব।"

খোকনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে তাপস বলেন, “মানহানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া মানেইতো আইনি ব্যবস্থা।”

ফুলবাড়িয়া মার্কেটে সাম্প্রতিক উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবিতে শনিবার ঢাকায় কদম ফোয়ারার সামনে মানববন্ধন করেন। সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ওই কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে এসে বর্তমান মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন।

তিনি বলেন, “তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন এবং এই শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ হিসেবে গ্রহণ করছেন। অন্যদিকে অর্থের অভাবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না, সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।”

‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে’ তাপস সিটি করপোরেশন আইনের ৯(২)(জ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার ‘যোগ্যতা হারিয়েছেন’ বলেও মন্তব্য করেন সাঈদ খোকন।

শনিবার যোগাযোগ করে কোনো বক্তব্য না পাওয়া গেলেও রোববার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তাপস।

তিনি বলেন, খোকন যা বলেছেন, তা তার ব্যক্তিগত অভিমত, ‘ভিত্তিহীন’ ওই বক্তব্য কোনো গুরুত্ব বহন করে না।

“কেউ যদি ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে কোনো কিছু বলে থাকেন, সেটার জবাব আমি এখন দায়িত্বশীল পদে থেকে দেওয়াটা সমীচীন বলে মনে করি না।”

তবে সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস ‘মানহানিকর বক্তব্যের’ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন। 

ঢাকার পানি প্রবাহের প্রায় সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে দক্ষিণের মেয়র বলেন, “পানি প্রবাহের কোনো ব্যবস্থাই নেই। যে কালভার্টগুলে আছে সেগুলো পুরোই অকার্যকর। পানি আসার কোনো উপায় নেই।"

এক্ষেত্রে কারও অবহেলা ছিল কি না- সেই প্রশ্নে মেয়র বলেন, “বর্তমানে পাম্প হাউজগুলো অচল অবস্থায় রয়েছে। এটা নিয়ে আমরা হতাশ। প্রকল্প নির্ভর কাজ হয়েছে, কোনো রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। কয়েক বছর ধরে কোনো কাজই হয়নি।"

তবে আগামী বর্ষার আগেই এই অচলাবস্থার ‘কিছুটা হলেও’ নিরসন করা যাবে বলে আশ্বাস দেন মেয়র ফজলে নূর তাপস।