কাদের মির্জা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, তার কথা নিয়ে একটি ‘কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে’। আর তিনি যা বলেছিলেন, তা শুধু স্থানীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট নিয়ে, তা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নয়।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধার সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র। ওই আসনেই ওবায়দুল কাদের সংসদ সদস্য।
আসন্ন পৌর নির্বাচনেও মেয়র প্রার্থী কাদের মির্জার কয়েকটি বক্তব্য সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় আলোচিত হয়। এর একটিতে তাকে বলতে শোনা গেছে- ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন-চারটা আসন ছাড়া বাকি আসনে আমাদের এমপিরা দরজা টোয়াই পাইতো ন (খুঁজে পাবে না)। এটাই হলো সত্য কথা।”
তার এই বক্তব্য জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং তাদের জোটের নেতারা।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্যে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল, নির্বাচন কমিশনকে কোলের মধ্যে বসিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের নামে দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে।”
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান কাদের মির্জা।
তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন সভায় দেওয়া আমার বক্তব্য নিয়ে একটি কুচক্রিমহল নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। নির্বাচন নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে মানুষের মাঝে।”
বক্তব্যের ব্যাখ্যায় কাদের মির্জা বলেন, “আমি শুধু একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্দেশ্যে ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন হয়, এ জন্য নানা নির্বাচনী কর্মসূচিতে আমি কথাগুলো বলছি।
“বিগত একযুগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে অভুতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, সে বিষয়গুলোও আমার বক্তব্যে আমি উল্লেখ করেছিলাম।
“আমি বলেছি, বৃহত্তর নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের কিছু কিছু চামচা নেতা আছেন যারা বলেন ওমুক নেতা তমুক নেতার নেতৃত্বে বিএনপির দুর্গ ভেঙেছে। সত্যি কথা হল, সাধারণ মানুষ বলে শেখ হাসিনা একলা কী করবেন? এতে প্রতীয়মান হয় যে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কারণে বৃহত্তর নোয়াখালীতে বিএনপির দুর্গ ভেঙে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।”
“কিন্তু কোনো কোনো গণমাধ্যমে সেগুলো বিস্তারিত উল্লেখ না করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্যের খণ্ড অংশবিশেষ প্রকাশ করেছে। আমি শুধুমাত্র বৃহত্তর নোয়াখালীর আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ে নানা অনিয়মের কথা বলেছিলাম। জাতীয় ইস্যুতে আমি কোনো বক্তব্য রাখিনি,“ বলেন কাদের মির্জা।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসার পাশাপাশি বিবৃতিতে বলেন, “জিয়াউর রহমান হাঁ-না ভোটের মাধ্যমে এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
ভাইয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজ নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও বৃহত্তর নোয়াখালীর উন্নয়ন ও জাতীয় সারাদেশে উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।”