গণতন্ত্রের চর্চা নেই বলে ভোটে মানুষের অনীহা: জিএম কাদের

সংবিধান অনুযায়ী দেশে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকায় জনগণ নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2020, 02:46 PM
Updated : 5 Dec 2020, 02:46 PM

শনিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে খুলনা বিভাগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ‘তৃণমূলে নেতৃত্ব নির্বাচন’ বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, “সংবিধানে গণতন্ত্রের কথা বলা থাকলেও দেশে গণতন্ত্র নাই। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ গণতন্ত্রের চর্চা করতে পারছে না। দিনে দিনে ভোটারের সংখ্যা কমেছে। বিভিন্ন সময় যেসব নির্বাচন হচ্ছে, তাতে ১০শতাংশ ভোটও কাস্ট হয় না।

“রাজনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য এবং নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ না থাকায় অনেকেই রাজনীতি থেকে ঝড়ে পড়ছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য কখনোই শুভ হতে পারেনা। এভাবে চলতে থাকলে অনেক দলই সাইনবোর্ড এবং নাম সর্বস্ব দলে পরিণত হবে।“

তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির রাজনীতি হচ্ছে দেশের মানুষকে নির্বাচনমুখী করা। আমরা রাজনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে চাই। রাজনীতির প্রতি মানুষের আকর্ষণ সৃষ্টি করতে চাই। আমরা চাই দেশের মানুষ যেন আবারো ভোটের প্রতি আগ্রহী হয়। নির্বাচনে যেন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা প্রতিফলিত হয়। আমরা মানুষের আস্থা অর্জন করে দেশ ও জনগণের সেবা করা।“

দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, “দেশের মানুষ নির্বাচনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, মানুষ আর ভোট কেন্দ্রে যায় না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দাবি করে, তাদের কারো ৪০ শতাংশ, কারো ৩৫ শতাংশ ভোট আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ২ থেকে ১০ শতাংশ ভোট পড়ছে নির্বাচনে। নির্বাচনের প্রতি মানুষের কেন অনাস্থা তা নির্বাচন কমিশনকে খুজে বের করতে হবে। নির্বাচনে মানুষের অনাগ্রহ হচ্ছে গণতন্ত্রের দুর্বলতা। জাতীয় পার্টি কোন প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চায় না। ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে জাতীয় পার্টি সোচ্চার ভূমিকা রাখবে।“

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, “ভোটের গোপনীয়তা এবং নির্বাচনের স্বচ্ছ পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে। ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হতে পারে।“

জাতীয় পার্টি আয়োজিত কর্মশালার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “নেতা নির্বাচনের বিষয়ে কর্মশালা জাতীয় রাজনীতির জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই উদ্যোগ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।“

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও সৈয়দ দিদার বখতসহ খুলনা বিভাগের ১১টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।