দেশকে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে গেছে সরকার: গয়েশ্বর

সরকার দেশকে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2020, 09:38 AM
Updated : 24 Nov 2020, 09:38 AM

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে এক দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি ভেন্টিলেশন আছে, লাইফ সাপোর্টে আছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনারা পুরো দেশটাকে তো লাইফ সাপোর্টে রাখছেন।

“এখন ইনডিভিজুয়ালি কোন দল, কোন ব্যক্তি লাইফ সাপোর্টে আছে- এটা নির্ণয় করা তো খুব কঠিন। কারণ দেশটা টিকবে কিনা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে মানুষ। কে যে ভেন্টিলেশনে আছেন, কে যে নাই- এটা অনুধাবণ বা উপলব্ধি করতে যদি পারতেন তাহলে অনেক আগেই মন্ত্রিসভা ছেড়ে দিতেন।”

সরকার প্রধানকে উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, “আপনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন, দেশটা আপনারও হাতে নাই। আপনি তো প্রধানমন্ত্রী না, আপনি হলেন পুতুল। আপনি নাচেন, আপনাকে কে নাচায় সেটা আপনিই ভালো করে জানেন। আমরা পুতুল নাচ দেখতেছি গণভবনে।”

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে ঘিরে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের একজন অবিসংবাদিত নেতা, তাকে ছোট করে ভাববার কোনো কারণ নাই, শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৬৫ দিনের জন্মদিন পালন হচ্ছে মুজিব জন্মশতবার্ষিকীতে। ব্যাংক, বীমা, শিল্প-কল-কারখানা মালিকরা বলতে পারবেন তাদের থেকে কত টাকা আদায় করা হয়েছে।

“কী পরিমাণ চাঁদাবাজি হইছে আর কী পরিমাণ রাষ্ট্রীয় টাকা খরচ হইছে তার তো হিসাব নাই। এই সবগুলো যদি একখানে করা হয় একটা জন্মদিনের, তাহলে বাংলাদেশের একবছরের বাজেটের টাকা হবে।”

গয়েশ্বর বলেন, “এই জন্মদিন পালন করতে গিয়ে অতি উৎসাহীরা শেখ মুজিবকে বাথরুমের মধ্যে ঢুকাই দিছে।ওদের টিস্যুর মধ্যে শেখ মুজিবের ছবি ছাপাইছে। অথচ এই ব্যক্তিটির জীবনে যতটুকু অবদান আছে, সেই অবদানের জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, সংগ্রামের ইতিহাসে একটা বিরাট অংশ তিনি দখল করে আছেন। তার জন্য তার মেয়ের এতো কিছু করার দরকার নাই। আর এই যে ঘুষ-দুর্নীতির টাকা দিয়ে জন্মদিন পালন করে তার প্রতি কি তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন নাকি অপমান করছেন?”

বিএনপির নেতৃত্বের জন্মদিন পালনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালন করি, খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করি, তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করি- তার জন্য তো চাঁদা তুলতে হয় না, তার জন্য তো আমাদের সরকারের কাছে টাকা চাইতে হয় না। তারজন্য তো ‘করতেই হবে’ একথা বলতে হয় না।”

দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “চিন্তা এবং দুশ্চিন্তা- দুটো জায়গার মধ্যে বিএনপি আছে, শহীদ জিয়া বীরোত্তম আছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আছেন, জনাব তারেক রহমান আছেন। সাধারণ মানুষের চিন্তার মধ্যে আছে ।আর এই স্বৈরাচারী সরকারের দুশ্চিন্তার মধ্যে আছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, “আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন, নিজের দলের চেহারা দেখুন। আওয়ামী লীগ কী আছে? আওয়ামী লীগে কি কোনো রাজনৈতিক কর্মী আছে? আওয়ামী লীগের আছে জি কে শামীম, ক্যাসিনো সম্রাট, সাবরিনা, পাপিয়া, শাহেদ। গুণ্ডা-পাণ্ডা-লুটেরা-ধর্ণনকারী ছাড়া আওয়ামী লীগে আর এখন কেউ নাই।”

“সুতরাং আমি বলব, বিএনপির দিকে তাকিয়ে লাভ নাই। নিজের দলের দিকে তাকান। আপনার দল শুধু লাইফ সাপোর্টে না, গলে-পচে গন্ধ বেরুচ্ছে। কখন কোথায় দাফন করবেন সেই চিন্তা করেন, বিএনপিকে নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না।”

তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এই দোয়া মাহফিল হয়।

দক্ষিণের সভাপতি কাজী মো. আমির খসরুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বাদলের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব ও শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেইন।