বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে আনা সাধারণ প্রস্তাবের উপর রোববার আলোচনায় তিনি বলেন, সরকার প্রধানের পদে বঙ্গবন্ধুকন্যার বিকল্প দেখছেন না তিনি।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাতে ১৪৭ বিধিতে সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
করেনাভাইরাস মহামারীকালে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনগুলোতে অনুপস্থিত থাকলেও বিশেষ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির নেত্রী রওশন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কর্মোদ্যমে বিমোহিত হওয়ার কথা জানান বিরোধীদলীয় নেতা।
রওশন বলেন, “আমরা সংসদ থেকে বাসায় গিয়েই শুয়ে পড়ি। আর প্রধানমন্ত্রী রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করে চলেছেন। এটা কী করে সম্ভব তা ভেবে আশ্চর্য হয়ে যাই।
“তিনি দেশ ও দেশের জনগণের জন্য এত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। দেশ অনেক এগিয়েই গেছে, তার নেতৃত্বে আরও এগিয়ে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।”
“দিনরাত ২৪ ঘণ্টা দেশ নিয়ে কাজ করেছেন। করেই যাবেন। উনি ছাড়া বিকল্প কেউ নেই। বিকল্প কাউকে দেখি না। তাকেই এ দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে,” বলেন তিনি।
জাতির পিতাকে স্মরণ করে রওশন এরশাদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়েছেন। তিনি স্বাধীন না করলে স্বাধীন দেশ পেতাম না। সংসদে এসে আমরা সংসদ সদস্য হতাম না। বক্তব্যও দিতে পারতাম না।
“হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে পেয়েছি, ৫৫ বছর ৫ মাস বাঁচতে দিয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলটের আঘাতে প্রাণ না হারালে শতায়ু হতে পারতেন।“
১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই উড়োজাহাজে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সেনাবাহিনীর তৎকালীন কর্মকর্তা এইচ এম এরশাদের স্ত্রী রওশন বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন তার দেখা না হলে অনুভূতি অসমাপ্ত থেকে যেত।
“বঙ্গবন্ধুকে যারা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তারাই ইতিহাস থেকে মুছে গেছে। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।”
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অর্জনের পথে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলার কথা বলেন জাতীয় পার্টির নেত্রী।
“শেখ হাসিানর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে দুর্গমগিরি পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। উল্লেখযোগ্য বহু অর্জন আমাদের আছে। বড় বড় আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নজর বাংলাদেশের দিকে। বাংলাদেশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধিতে চীন, ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হচ্ছে পদ্মা সেতু ও নদীগর্ভে টানেল। তবুও বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য অর্জনে আমাদের বহুদূর হাঁটতে হবে।”
জাতীয় সংসদে আনা প্রস্তাবের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, “শেখ মুজিব ও স্বাধীন বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য। এটা হঠাৎ করে হয়নি। এর সঙ্গে অনেক ত্যাগ, তিতীক্ষা, শ্রম জড়িত।
“তিনি জীবনের এক চতুর্থাংশ সময় জেল খেটেছেন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষের অধিকার আদায় তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।“
“বঙ্গবন্ধুকে দলীয় গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখা সমীচীন নয়। সব দলের জন্য তিনি জাতির পিতা,“ বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।