বিএনপির ‘আগুন সন্ত্রাসের’ পুনরাবৃত্তি: কাদের

বিএনপি তাদের ‘নীলনকশা অনুযায়ী’ ভোটের দিন রাজধানীতে ‘বাসে আগুন দিয়ে নাশকতা করেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2020, 09:50 AM
Updated : 13 Nov 2020, 11:42 AM

শুক্রবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তার এমন মন্তব্য আসে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেই পুরানো আগুন সন্ত্রাসের সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি, এটা তারা আগের মত শুরু করেছেন। এর মধ্যে একটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে, পুলিশের কাছে আছে, এখানে বিএনপি কর্মীদের উপস্থিতি চেহারা দেখলে বোঝা যায়। কৌশলটা ছিল এমন যে, বাসের ভিতরে যাত্রী সেজে বসে থেকে আগুন লাগানোর সময় আগুন আগুন বলে যাত্রী সেজে পিছনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে যায়।”

বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৮ আসনে উপ নির্বাচনের মধ্যে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতাকর্মীরা নয়া পল্টনে মিছিল বের করার পর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দশটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।

এসব ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নয়টি মামলা করা হয়েছে, যাতে বিএনপি নেতাকর্মীদেরই আসামি করা হয়েছে।

২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসে বিএনপি-জামায়াত জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে ব্যাপক নাশকতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তাদের কাজই হচ্ছে এসব। হম্বি-তম্বি করবে, ভোটের দিন আর নেই। একটা সময় বেছে নিয়েছে তারা। গতকালের নাশকতা প্রমাণ করেছে, বিএনপি তাদের চিরাচরিত সন্ত্রাসী পথ পরিহার করতে পারেনি। তাদের নীলনকশা অনুযায়ী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং গতকাল রাজধানীতে এই নাশকতা।”

‘এসব কর্মকাণ্ডের’ কারণেই জণগন বিএনপিকে ‘বারবার প্রত্যাখান করেছে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা লোটার অপচেষ্টা তারা করে যাচ্ছে, এটা তাদের পুরানো অভ্যাস।”

আওয়ামী লীগ ‘অতীতের মত জণগনকে সঙ্গে নিয়ে’ এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ‘দাঁত ভাঙা জবাব দেবে বলেও মন্তব্য করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “আমরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, বিএনপির এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বৈশ্বিক মহামারী এই করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও তাদের ধারাবাহিক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। মহামারীকালে কোনো সভ্য দেশে এ ধরনের ভয়াবহতার ভাবনা আসাটাও অচিন্তনীয়।”

জয়ের জন্য নয়, নির্বাচনকে ‘বিতর্কিত করার লক্ষ্য’ নিয়েই বিএনপি ভোটে অংশ নেয় বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, এটা কি সাংবাদিকরা বিশ্বাস করবে? কোনো মিডিয়াই বলেনি ভোটে জালিয়াতি, দখলবাজি হয়েছে, কারচুপি হয়েছে। এমনকি আমাদের কট্টরপন্থি সমালোচকরাও এই নির্বাচন নিয়ে এমন কথা বলতে পারেনি। শুধু বিএনপির মুখেই এসব কথা। (তাদের কাছে) নির্বাচন সুষ্ঠু হবে তখন, যখন বিএনপিকে জেতার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে।

নির্বাচন নিয়ে বিএনপি এখন ‘নতুন কৌশল’ নিয়েছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, “তারা নির্বাচন নিয়ে খুব হইচই করবে। নির্বাচনের প্রচারও করবে, কিন্তু নির্বাচনের দিন কোনো এজেন্ট দেবে না, নির্বচনে এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু আপনারা সাংবাদিকরা সবচেয়ে বড় সাক্ষী। একটা টু-শব্দ পর্যন্ত হয়নি। এত শান্তিপূর্ণ, এত সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।”

তার দাবি, বিএনপি ‘হেরে যাবে’ জেনেই নির্বাচনকে বিতর্কিত করার’ এই কৌশল নিয়েছে।

“জেতার বিষয়টা তারা বাদ দিয়ে দিয়েছে। তারা জানে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার উন্নয়ন, সঙ্কট মোকাবিলার তার যে সাহসী নেতৃত্ব, ইভেন এই বৈশ্বিক মহামারীতে অন্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি। ... বিএনপি জানে, জনগণের ভোটে তারা জিততে পারেবে না। সেজন্যই নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে তারা অংশ নিয়েছে।”

নির্বাচন ‘শান্তিপূর্ণ’ হলেও ঢাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ভোট পড়েনি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এখন করোনাভাইরাসের কারণে অনেকেই আসে না। এছাড়া এই নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হচ্ছে না মনে করে অনেকে ভোট কেন্দ্রে যায় না।”