মুজিববর্ষে রাষ্ট্র ‘মেরামতের’ দরকার: হারুন

মুজিববর্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্যে রাষ্ট্র ‘মেরামতের’ উদ্যোগ নিতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2020, 08:30 PM
Updated : 12 Nov 2020, 08:30 PM

তিনি বলেছেন, “মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষ্যে আমাদের উচিত ছিল রাষ্ট্র মেরামত করার। আজকে সারা বাংলাদেশ দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছেন। আজকে বাংলাদেশে ধর্ষণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

“এখানে শেষ নয়। সুশাসনের বড় অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা, আমাদের উচিত ছিল এ বছরে মেরামত করা।”

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে আনা সাধারণ প্রস্তাবের উপর বৃহস্পতিবার আলোচনায় তিনি একথা বলেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন বলেন, “আমার জন্য বক্তব্য দেয়া কিন্তু সত্যি খুব কঠিন। … বলতে দ্বিধা নেই জাতীয় নেতৃবৃন্দকে আমাদের সম্মান ও মর্যাদা অবশ্যই দিতে হবে। চলার জীবনে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

“আজকে স্বাধীনতার ঘোষক কে তা নিয়ে যদি বিতর্ক করা হয়, তবে শেখ মুজিবকে কি বড়-ছোট করা যাবে মাননীয় স্পিকার? এ ধরনের বিতর্ক আনা উচিতই নয়।”

তিনি বলেন, “শেখ মুজিবের যে দীর্ঘ ২০ বছরের সংগ্রাম, সেটা কেউ অস্বীকার করে না। অস্বীকার করার উপায় নেই।”

হারুন বলেন, “একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার ব্যক্তিগত মূল্যায়ন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু সঠিক কাজ করেছেন। উনি যদি পালিয়ে যেতেন, ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করতেন তাহলে আন্তর্জাতিক শাসকরা বলতেন, বঙ্গবন্ধু বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা। বঙ্গবন্ধু সেটা বুঝেছিলেন।”

সংবিধানের নির্দেশনা মেনে চললে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কমে যাবে বলে মনে করেন হারুন।

“রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্য থাকবে, স্বাভাবিক। তখনই বিবাদ সৃষ্টি হয়, যখন আমাদের প্রচলিত বিধানের সীমা লঙ্ঘন করি।”

৭৫ এ দায়িত্বে থাকা বাহিনী প্রধানদের বিচার দাবি

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সময় বিভিন্ন বাহিনী প্রধানদের বিচার চেয়েছেন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।

জাতীয় পার্টির এ নেতা বলেন, “(বঙ্গবন্ধুর) খুনিদের বিচার হলেও নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হয়নি। ওই ঘটনায় যারা নীরব ছিলেন, তাদেরও বিচার হওয়া দরকার। সেই সময়ের রাষ্ট্রীয় ও সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বে যারা ছিলেন, তাদের বিচার করতে হবে। রক্ষীবাহিনী, সেনাবাহিনী সেসময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রধানদের জবাবদিহি করা উচিত। আমাদের যারা পিতৃহীন করেছেন তাদের বিচার চাই।“

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে ছিল তাদের খুঁজে বের করতে সর্বদলীয় কমিটি করা দরকার। একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষকে প্রধান করে এই কমিটি করা দরকার। একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত। যাতে থাকবে, কেন গোয়েন্দা সংস্থা আগে থেকে বুঝতে পারলো না। কারা ট্যাংকের শব্দ শুনলেন কিন্তু ঘর থেকে বের হলেন না। কোন দেশি-বিদেশি শক্তি বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে ছিল।”

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “দুর্ভাগ্যের বিষয় জাতির পিতাকে যারা ১৫ আগস্ট হত্যা করে যারা এখনো বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করে না এমন ব্যক্তিমহল গোষ্ঠী এখনো বাংলাদেশের মাটিতে রয়েছে।

“এই বিশ্বাসঘাতরা পরাজিত শক্তির সাথে হাতে মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। এসব জঘন্য খুনি বিশ্বাসঘাতকদের প্রধান রক্ষক, পৃষ্ঠপোষক ও পুনর্বাসক হচ্ছেন জেনারেল জিয়া। সব খুনিদের আশ্রয়দাতা, ঠিকানা ও রাজনৈতিক ছাড়া। এরা বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।”

দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সাধারণ আলোচনায় দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “জনঘনত্বে বিশ্বে বাংলাদেশের হার এত বেশি তারপরও আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুর হার, সংক্রমণের হার, বিশ্বের সবচেয়ে কম।

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এটা সম্ভব হয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এ অর্জনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।”

দেশবাসীর উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “করোনায় আজ বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। আমাদের দেশে করোনা সংক্রমণ চলছে। তাই সকলকে বলবো বাসা থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্যই মাস্ক পরবেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বর শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইল ফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ। প্রতিটি মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে।