আওয়ামী লীগ নেতা সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এ আসনে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
বিএনপি প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন সকাল পৌনে ১০টার দিকে উত্তরার ৮ নম্বর সেক্টরের মালেকা বানু হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেওয়র পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, “আশপাশের সব ডিস্ট্রিক্ট থেকে লোক এসেছে; সাধারণ ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারছে না। ভোটকেন্দ্রের একেবারে কাছাকাছি তারা ক্যাম্প করে রেখেছে, যেটা বেআইনি।
“তারা কোনোভাবেই চায় না জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক। তারা কোনোভাবেই চায় না ভোটাররা ভোট দিক।”
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে ‘বাধা দেওয়া হচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন ধানের শীষের এ প্রার্থী।
ভোটে ‘অনিয়ম’ হচ্ছে অভিযোগ করে জাহাঙ্গীর বলেন, “দুয়েকটা সেন্টারে আমাদের এজেন্ট ঢুকতে পেরেছে। অন্যত্র পারেনি বলে কন্ট্রোল রুম থেকে বলেছে।”
এর আগে সকাল পৌন ১০টার দিকে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের আইইএস স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিব হাসান।
নিজের জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে ক্ষমতাসীন দলের এ প্রার্থী বলেন, “আমি শতভাগ নিশ্চিত । মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত তাদের ভোট প্রোয়োগ করছে। আমি সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি, ভোটার উপস্থিতি ভালেই রয়েছে, বেলা বাড়ার সাথে সাথে এ সংখ্যা আরো বারবে।"
বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “ঢাকা-১৮ আসনে আমাদের নেতাকর্মীর অভাব নেই। লক্ষ লক্ষ, হাজার হাজার নেতাকর্মী। আমাদের প্রতিপক্ষ বন্ধুর (এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন) ঢাকা-১৮ আসনের জনগণের প্রতি উনার আস্থা নাই। তিনি বাইরে থেকে লোক জড়ো করেছেন।”
হাবিব পাল্টা অভিযোগ করেন, “আমার কাছে তথ্য আছে, উনি (জাহাঙ্গীর) বহিরাগতদের মাধ্যমে এখানে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে পারেন।"
বিএনপির প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাবিব বলেন, "আমরা কোনো এজেন্ট বের করিনি, মিডিয়া ছিল, আপনারা দেখছেন এমন কিছু হতে?"
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও উত্তরার আইইএস স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের কোনো সত্যতা তারা পাননি।
“প্রথম কথা হলো- এটা সঠিক না। আমাকে বিএনপির সম্মানীয় ব্যক্তি সকাল সাড়ে ৯টায় ফোন করেছিলেন, কমিশনে কয়েকজন লোক অভিযোগ নিয়ে আসবেন। এজন্যে অপেক্ষাও করেছি। ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও আসেনি অভিযোগ নিয়ে। পরেও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে এলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”
বিএনপির অভিযোগের সত্যতা আছে বলে ‘মনে করেন না’ জানিয়ে সিইসি বলেন, “৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে এজেন্ট বের করে দিয়েছে, ঢুকতে দেয়নি (বলে অভিযোগ)। রিটার্নিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসারের মাধ্যমে খোঁজ নিয়েছি- অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের (এজেন্ট) যায়নি। বিএনপির কোনো এজেন্ট প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে রিপোর্ট করেনি।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১, ১৭, ৪৩ থেকে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং বিমানবন্দর এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসন সাংসদ সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শূন্য হয়।
পৌনে ছয় লাখ ভোটারের এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থী ছাড়াও জাতীয় পার্টির নাসির উদ্দিন সরকার, গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ওমর ফারুক ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মবিবুল্লাহ বাহার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।