আপত্তির জন্য ১১ দফায় ‘বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই’ লিখতে পারিনি: তোফায়েল

বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফায় ‘কারো কারো আপত্তির কারণে’ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিটি অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সেই সময়কার ডাকসুর ভিপি ও ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2020, 03:23 PM
Updated : 10 Nov 2020, 04:28 PM

মঙ্গলবার সংসদে তিনি বলেন, “আমাদের মতপথের ভিন্নতা ছিল। তারপরও আমরা এক হতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফাকে আমরা ১১ দফায় (সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের) অন্তর্ভুক্ত করেছি।

“বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই, এটা আমরা লিখতে পারিনি। কেউ কেউ আপত্তি করেছিলেন। এজন্য আমরা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার চেয়েছিলাম। তবে আমরা মনে করেছিলাম এই দাবি এক দফায় চলে আসবে। ঠিকই পল্টনের জনসভার পর আন্দোলন এক দফায় পরিণত হল।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে আনা সাধারণ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় একথা বলেন প্রবীণ রাজনীতিক তোফায়েল।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাতে ১৪৭ বিধিতে সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

১৯৬৯ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ, রাশেদ খান মেনন সমর্থিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন, মতিয়া চৌধুরী সমর্থিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ৮ জন নেতার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।

ওই বছরের জানুয়ারিতে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন এনএসএফ ভেঙে তাদের সদস্য মাহবুবুল হক দুলন, ইব্রাহিম খলিল, নাজিম কামরান চৌধুরী সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালের ১৪ জানুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে, যা ঐতিহাসিক ১১ দফা কর্মসূচি হিসেবে পরিচিত।

৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট ও বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করেন তোফায়েল আহমেদ। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশ থেকে তোফায়েলকে নানা ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেন।

তোফায়েল বলেন, “মতিউরের মৃত্যুর পর সত্যিকার গণঅভ্যুত্থান শুরু হল। মানুষ রাজপথে নেমে এল। মানুষ সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করল। আমরা ৯ ফেব্রুয়ারি পল্টনে জনসভার ডাক দিলাম। সেই জনসভার পর ছাত্র আন্দোলন চলে এলো এক দফায়।”

তিনি বলেন, ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু ৩৫ দিনে ৩২টি জনসভা করেছিলেন। এক জায়গায় বক্তৃতা করেছেন আর গ্রেপ্তার হয়েছেন। ওই সময় এভাবে আটবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তোফায়েল বলেন, “বঙ্গবন্ধু জাতীয় নেতা নয়, ছিলেন আন্তর্জাতিক বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেতা। জাতির পিতা সপরিবারে রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতির রক্তের ঋণ শোধ করে গেছেন।

“জন্মশতবার্ষিকীতে বলতে চাই, জাতির পিতা, এই জাতি কোনদিন আপনাকে ভুলবে না। আপনার স্বপ্নের বাংলাদেশ আপনার কন্যা গড়ে তুলছেন। তিনি বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে একটি সম্মানিত রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বের মহান নেতা।”