রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণে সাম্প্রদায়িক হামলা: ওয়ার্কার্স পার্টি

দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নিপীড়নকে বিশেষ রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2020, 05:18 PM
Updated : 8 Nov 2020, 05:18 PM

দলটির পলিটব্যুরো রোববারের সভায় গৃহীত প্রস্তাবে সম্প্রতি দেশে ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা সৃষ্টির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়, ধর্মকেন্দ্রীক এসব ঘটনা রাজনীতিবহির্ভূত নয়। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার মাধ্যমে বিশেষ রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশবিশেষ।

“এই অবস্থায় অতীতের পরিচিত পথে মৌলবাদী ধর্মবাদী মহলকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তাকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা প্রয়োজন, যা সম্প্রতি অনুপস্থিত। প্রয়োজন জনগণের উপর নির্ভর করা।”

সেই লক্ষ্য পূরণে ১৪ দল ও সকল গণতান্ত্রিক সামাজিক সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি।

‘বাকস্বাধীনতার নামে মহানবী (সঃ) এর উপুর্যপুরি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ পৃথিবীর সব দেশের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানদের আহত ও ক্ষুদ্ধ’ করেছে যার সাথে ওয়ার্কার্স পার্টি সহমত প্রকাশ করে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামীর নেতারা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা ‘বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও অগণতান্ত্রিক’ বলে মনে করেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা।

গত ২ নভেম্বর ঢাকায় হেফাজতে ইসলামীর ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও সমাবেশে মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরী ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে ফ্রান্সের জাতীয় পণ্য বর্জনের ডাকও আসে এই সমাবেশ থেকে।

ওয়ার্কার্স পার্টি বলছে, বাবুনগরীর এ ধরণের উসকানিমূলক বিবৃতির প্রেক্ষাপটেই লালমনিরহাটে বুড়িমারীতে কোরআন অবমানননার গুজব ছাড়িয়ে শহীদুন্নবী জুয়েলকে হত্যা, পরে দেশের কয়েকটি স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমন চালানো হয়েছে।

জাতীয় সঙ্গীত বিকৃতি ও বিভিন্ন ধর্ম সভায় অন্যান্য ধর্ম নিয়ে কটুক্তি অব্যাহত থাকলেও সেসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা।   

বিবৃতিতে বলা হয়েছে,“জাতীয় সংগীতের ধর্মীয়করণ করে পরিবেশন, অন্য ধর্ম সম্প্রদায়ের ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি আক্রমণ এমনকি ধর্ম নিয়ে উত্তেজক ও উষ্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার ও প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, ইচ্ছাকৃত নীরবতা পালন করছে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবনায় অবিলম্বে তিস্তা চুত্তি সম্পাদনের জন্য সরকারে প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত প্রস্তাব উপস্থাপন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। সভায় উপস্থিত ছিলেন পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, কামরুল আহসান, হাজেরা সুলতানা, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, নজরুল ইসলাম হক্কানী, হাজী বশিরুল আলম, জ্যোতি শংকর ঝন্টু, নজরুল হক নীলু, আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান।