৭ নভেম্বর ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবসে’ শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব তুলে ধরে ইনু বলেন, “৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা বা অফিসার হত্যা বা সৈনিক হত্যা বা বিপ্লব ও সংহতি দিবস নয়। যারা এতদিন পর্যন্ত ৭ নভেম্বরকে চিহ্নিত করতে চেয়েছে তারা ইতিহাসকে আড়াল এবং বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার খুনিসহ ষড়যন্ত্রকারী-খুনিদের আড়াল করা, তাদের পক্ষে ওকালতি করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে।
“দেরিতে হলেও ধামাচাপা দেওয়া সত্য আজ প্রকাশিত। খোদ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে এখন সবাই খুবই সুস্পষ্টভাবে বলছেন কারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, কারা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, কারা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের নিরাপদে দেশত্যাগ করার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এমনকি খালেদ মোশাররফকে কার নির্দেশে কোন অফিসাররা হত্যা করেছে, খোদ খালেদ মোশাররফের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের নামও আজ প্রকাশ করা হয়েছে।”
ইনু ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা, ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতা হত্যা, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান দমন, খালেদ মোশাররফ হত্যা, জিয়ার শাসনামলে কর্নেল তাহেরকে সাজানো বিচারে ফাঁসিতে ঝোলানো এবং সেনানিবাসগুলোতে সেনা কর্মকর্তা হত্যার তদন্ত করে সত্য উদঘাটনে একটি ‘জাতীয় সত্য উদঘাটন কমিশন’ গঠন করার আহ্বান জানান।
জাসদ সভাপতি বলেন, “এখনও পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামাত ও তাদের সঙ্গী জঙ্গিবাদী-উগ্রবাদীরা বাংলাদেশ রাষ্ট্র, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধকে চ্যালেঞ্জ করছে।
“অসাম্প্রদায়িকতা-সুশাসন-সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদেরকে জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদ-সাম্প্রদায়িকতা এবং দুর্নীতি-বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই দুই ফ্রন্টে একইসাথে লড়াই করতে হবে।”
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, “৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থানের চেতনা ও শহীদ কর্নেল তাহেরের আত্মবলিদানের মহান ইতিহাসকে ধারন করে জাসদ ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামো, পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা মোকাবেলা করার পাশাপাশি সমানতালে দুর্নীতি ও বৈষম্যের অবসানে সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে সংগ্রামের পথে অবিচল আছে।”
জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কর্নেল তাহেরের ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, “যতই দিন যাচ্ছে শহীদ কর্নেল আবু তাহের একজন মহান বিপ্লবী হিসাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন। আজ বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-যুবকরা বিপ্লবী কর্নেল তাহেরকে বিপ্লবের প্রতীক হিসাবে গ্রহণ করছে।”
জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর হোসাইন আখতার, সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, শ্রমিক জোটের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, জাতীয় যুব জোটের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন, জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল হক ননী সভায় বক্তব্য রাখেন।